নজরে ভোট ভাগ অঙ্ক

যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটে যা করা সম্ভব লোকসভার ক্ষেত্রে সে কৌশল কাজে না- লাগার সম্ভাবনাই বেশি। তা ছাড়া পঞ্চায়েত ভোটের পর  ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ মাঠে নেমেছে শাসক দল। নিয়েছে আদিবাসী ভোট বিভাজনের কৌশলও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৬
Share:

লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রামে প্রার্থী দেবে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। রবিবার ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিল তারা। পঞ্চায়েত ভোটে বেলপাহাড়ি ব্লকে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে শাসকদলকে যথেষ্ট চাপে ফেলেছিল এই মঞ্চ। তাই তাদের প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটে যা করা সম্ভব লোকসভার ক্ষেত্রে সে কৌশল কাজে না- লাগার সম্ভাবনাই বেশি। তা ছাড়া পঞ্চায়েত ভোটের পর ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ মাঠে নেমেছে শাসক দল। নিয়েছে আদিবাসী ভোট বিভাজনের কৌশলও। তাই শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তার দিকে নজর থাকবে সকলেরই। প্রার্থী হিসেবে শাসক দল কাকে বেছে নিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তা-ও। অনেকের মতো সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর এক নেতার স্ত্রীর নাম প্রার্থী হিসেবে সামনে আসছে।

গত কয়েক বছর ধরে সাঁওতালি ভাষায় সুষ্ঠু পাঠক্রম সহ সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জন্য এক গুচ্ছ দাবিতে আন্দোলন করে চলেছে পারগানা মহল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে পারগানা মহলের নেতাদের ডেকে বৈঠকও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমকে পারগানা মহল জানিয়ে দিয়েছিল আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ একটি স্বতন্ত্র মঞ্চ। পঞ্চায়েত ভোটে দেখা যায়, বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি, শিমূলপাল ও ভুলাভেদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ দখল করে নেয়। সরকারও চাপে রাখার কৌশল নিয়ে পারগানা মহলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছিল। গত বছর জুনে বে‌লপাহাড়িতে পারগানা মহলের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে ‘ভারত দিশম মাঝি মাডওয়া’ নামে একটি পাল্টা আদিবাসী সংগঠন তৈরি করে। পাল্টা সংগঠনের মুখ হিসেবে উঠে আসেন আদিবাসী যুব সংগঠন জুয়ান গাঁওতা-র নেতা প্রবীর মুর্মু। পারগানা মহলের সর্বোচ্চ নেতা (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কয়েকটা আসন জেতা আর লোকসভা ভোটে লড়া এক নয়।’’ তা হলে আপনারা কী করবেন? নিত্যানন্দের কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে তৃণমূলকে সমর্থন করা ছাড়া আমাদের আর কোনও রাস্তা নেই। আমাদের সংগঠনের পদাধিকারীরা প্রার্থী হবেন না। পদাধিকারী বাদ দিয়ে আমাদের সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যাঁরা রয়েছেন, তেমন সাধারণ কেউ প্রার্থী হলে আমরা পূর্ণ সমর্থন দেব।’’ জুয়ান গাঁওতার নেতা প্রবীর মুর্মু বলছেন, ‘‘আমরা যখন প্রশাসনের সঙ্গে যোগসূত্র রেখে আদিবাসী উন্নয়নের কাজ শুরু করলাম। তখন আমাদের দালাল তকমা দেওয়া হল। আর এঁরা কী করছেন?’’ আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের শরিক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ভূমিজ মুণ্ডা কল্যাণ সমিতির সম্পাদক লক্ষ্মীনারায়ণ সিংহ সর্দারের কথায়, ‘‘সমস্ত আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আমরা লড়াই করতে চাই।’’

Advertisement

পক্ষ অনেক। পক্ষের মধ্যে রয়েছে বিভাজন। ভোটের এখনও বেশকিছুটা সময় বাকি। কার সমর্থন কখন কোনদিকে যায় তার উপরে অনেকটা নির্ভর করবে জটিল অঙ্কের সূত্র। তবে সহজ সূত্রে আর কবেই বা নির্বাচনী বৈতরণী উতরানো গিয়েছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement