পোড়া তেলে চপ, নেই নজরদারি

মুখরোচক সেই সব তেলেভাজা তৃপ্তি করে খাচ্ছেন সকলে। শুধু চপ নয়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রান্না হচ্ছে চাউমিন থেকে বিরিয়ানি। দেখার অবশ্য কেউ নেই।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ১০:০০
Share:

লোহার কড়াই ভর্তি টলটলে কালো তেল। দিনের পর দিন ওই তেলেই ভাজা হচ্ছে চপ-সিঙাড়া-চিকেন পকোড়া। মুখরোচক সেই সব তেলেভাজা তৃপ্তি করে খাচ্ছেন সকলে। শুধু চপ নয়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রান্না হচ্ছে চাউমিন থেকে বিরিয়ানি। দেখার অবশ্য কেউ নেই।

Advertisement

নজরদারি দূরের কথা, শহরে কতগুলি খাবার দোকান ও ফুড স্টল রয়েছে, সেই সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্যই নেই পুরসভার হাতে। পুর কর্তৃপক্ষের সাফাই, আগে পুরসভা খাবার দোকানগুলিকে একসঙ্গে ফুড লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স দিত। ২০১২ সাল থেকে নতুন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ফুড লাইসেন্স দেয় স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভা কেবল ট্রেড লাইসেন্স দেয়। পুরসভার নথিতে অরণ্য শহরে ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকানের সংখ্যা ২৮৬টি।

স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শহরে দু’শোর বেশি খাবার দোকানের ফুড লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। তবে এর বাইরেও শহরে রাস্তার ধারে লাইসেন্সবিহীন বহু অস্থায়ী খাবার দোকান চলছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

শহরের স্টেশন রোডের মিষ্টির দোকানে কিছুদিন আগে রসগোল্লা কিনতে গিয়ে রসে আরশোলা ভাসতে দেখে গা গুলিয়ে ওঠে সন্দীপকুমার দত্তর। পরে রসগোল্লা না কিনেই ফিরে আসেন তিনি। খাবারের মান পরীক্ষার দাবি করছেন তিনি। কলেজ পড়ুয়া পার্বতী বেরা বলেন, “কয়েকদিন আগে বাজারের একটি দোকানে চিকেন ড্রাই ফ্রাইয়ে কামড় দিয়ে দেখি দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। অবিলম্বে খাবারের মান পরীক্ষা করে দেখার ব্যবস্থা
করা উচিত।”

স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার একযোগে খাবারের গুণমান যাচাইয়ের অভিযান চালানোর কথা। যদিও ঝাড়গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের ‘ফুড সেফটি অফিসার’ না থাকায় খাবারের গুণমান যাচাইয়ের কাজও হয় না। শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি চা-টোস্টের দোকান চালান বেলারানি। অপরিচ্ছন্ন তেলচিটে বাসনে ডিম ভাজা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, “কেউ কোনওদিন এ সব নিয়ে বলেনি। তবে কাঁচের গ্লাসের বদলে ক্রেতাদের কাগজের গ্লাসে
চা দিই।”

শহরের নাম করা একটি হোটেল ও রেস্তোরাঁর মালিক মৃণ্ময় কুণ্ডুও বলছেন, “বহু বছর আগে পুরসভার জনস্বাস্থ্য পরিদর্শক খাবারের গুণমান যাচাই করতেন। এখন সে সব বন্ধ। যাচাই হলে তো ভালই। আমরাও সচেতন হতে পারব।”

এ বিষয়ে ঝাড়গ্রাম পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক হরিসাধন ঘোষ বলেন, “উপযুক্ত কর্মী না থাকায় নজরদারির কাজ করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলব।” ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “শীঘ্রই আমরা নজরদারি ও খাবার যাচাইয়ের কাজ শুরু করব। যারা বিনা লাইসেন্সে দোকান চালাচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন