নতুন সেতুর নাম ঠিক করতে নথি ঘাঁটছে প্রশাসন

নাম দিয়ে যায় চেনা! জঙ্গলকন্যা বললেই মনে পড়ে নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখার উপর সেতুর কথা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারেই এই সেতুটির নাম রাখা হয়েছে ‘জঙ্গলকন্যা’।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:০৮
Share:

আবেদন: মেদিনীপুরের প্রথম জেলাশাসক সূর্যকুমার অগস্তির নামেই জমা পড়েছে সেতুর নামকরণের প্রস্তাব। নিজস্ব চিত্র

নাম দিয়ে যায় চেনা!

Advertisement

জঙ্গলকন্যা বললেই মনে পড়ে নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখার উপর সেতুর কথা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারেই এই সেতুটির নাম রাখা হয়েছে ‘জঙ্গলকন্যা’। মেদিনীপুর শহরের পাশে কংসাবতী নদীর উপরে থাকা সেতুটি দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নামে। গড়বেতার মাইতায় শিলাবতীর উপর তৈরি নতুন সেতু মেদিনীপুরের প্রথম জেলাশাসকের নামে করার দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। ইতিমধ্যে নিজের ইচ্ছের কথা জেলার একাংশ প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়েছেন আশিসবাবু। এলাকার বিধায়কের কাছ থেকে সেই প্রস্তাব পেয়ে পুরনো নথি ঘাঁটতে শুরু করেছে কালেক্টরেট!

আশিসবাবু মানছেন, “জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁদের কাছে মাইতার সেতুর নামকরণের প্রস্তাব রেখেছি।’’ তিনি বলছেন, ‘‘বিভিন্ন নথিপত্র ঘেঁটে দেখেছি, মেদিনীপুরের প্রথম জেলাশাসক ছিলেন সূর্যকুমার অগস্তি। তখন সময়টা ১৮৯৬। উনি গড়বেতারই বাসিন্দা। তাই ওঁনার নামে সেতুর নামকরণের প্রস্তাব রেখেছি।” গড়বেতার বিধায়কের কথায়, “বিশিষ্টজনেদের নামে সেতুর নামকরণ তো হয়েই থাকে। মেদিনীপুরের প্রথম জেলাশাসকের নামে মাইতার সেতুর নামকরণ হলে গড়বেতার মানুষ খুব খুশি হবেন।”

Advertisement

মাস কয়েক আগেই গড়বেতার মাইতা শিলাবতীর উপর সেতুর কাজ শেষ হয়। কাজ শেষের পরে সেতুটি চালুও হয়ে গিয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এখনও হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন সফরে এই সেতুর উদ্বোধন হতে পারে বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। এতদিন নদীর উপর নড়বড়ে কাঠের সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হত। বর্ষায় নদীর জল বাড়লেই সাঁকো ভেঙে পড়ত। তখন ঝক্কির শেষ ছিল না। তবে নতুন সেতু হওয়ায় এখন অবশ্য সকলে খুশি।

নতুন এই সেতুর নামকরণের প্রস্তাবের পাশাপাশি জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের আশিসবাবু জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যেই সূর্যকুমার অগস্তি সম্পর্কে কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সূর্যকুমারবাবু অবিভক্ত বঙ্গদেশে বিভিন্ন জেলায় জেলাশাসক হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর কাজের সময়কাল ছিল ১৮৮৪-১৯১২। তিনি অবিভক্ত বঙ্গ-বিহার-ওড়িশার নানা জেলায় কর্মরত ছিলেন। সবমিলিয়ে ১৩টি জেলায় জেলাশাসক হিসেবে কাজ করেছেন। এরমধ্যে যেমন মেদিনীপুর, নদিয়া, বর্ধমান রয়েছে তেমনই রয়েছে পাবনা, পুরী, রাজশাহী, যশোহর, খুলনা, ভাগলপুর, পূর্ণিয়া, নোয়াখালি, বালেশ্বরও। আশিসবাবুর কথায়, “ওঁনার জীবনী সম্পর্কে জেনেছি। সূর্যকুমার অগস্তির তুলনা তিনি নিজেই। সহজে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতেন। মানুষের সমস্যার কথা শুনতেন। সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতেন।” জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “গড়বেতার বিধায়কের প্রস্তাবটি অভিনব। দেখা যাক শেষমেশ কী হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন