সারাই: প্রতাপপুরে এই বাঁধ সংস্কার নিয়েই উঠেছে ঢিলেমির অভিযোগ। বৃহস্পতিবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
সাতদিন কেটে গিয়েছে। এখনও মেরামতির কাজ শেষ হয়নি ঘাটালের প্রতাপপুরে ভেঙে যাওয়া শিলাবতী নদীর বাঁধ। গত শুক্রবার, ৪ অগস্ট ঘাটালে এসে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতির পরেও বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বানভাসি ঘাটালের মানুষ। এমনকী মেরামতি কবে শেষ হবে তাও নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেনি সেচ দফতর। বৃহস্পতিবার মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। তবে কবে শেষ হবে তা বলতে পারব না।”
নিম্নচাপের জেরে ঘাটালে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর জলও বাড়ছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে জলও বেরোচ্ছে। যদিও তার পরিমাণ খুবই কম। ঘাটাল শহরে সেই জল না ঢুকলেও দাসপুর এলাকায় ঢুকছে। এমনিতেই ঘাটাল ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত এবং দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে এখনও জল নামেনি। ঘরবাড়ি, স্কুল থেকে রাস্তাঘাটে কোথাও কোমর, কোথাও হাঁটুজল। দাসপুরের একাধিক বিদ্যুতের সাবস্টেশন এখনও জলের তলায়। ১০-১২ দিন কেটে গেলেও এখনও বিদ্যুৎ নেই। হাহাকার পানীয় জলেরও। এতদিন জলে ডুবে থাকায় এবার এক এক করে অনেক কাঁচাবাড়িও ভেঙে পড়ছে। ফলে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে দাসপুর এলাকায়। ভিটে ছেড়ে বহু মানুষ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। পাশাপাশি নিম্নচাপের বৃষ্টিতে নদীর জল বাড়ায় উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ না হওয়ায় ভারী বৃষ্টি হলেই ফের ঘাটাল শহর প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে শহরবাসী।
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পরেও এখনও কেন ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ করতে পারল না সেচ দফতর। কেন এখনও দুর্বল নদীবাঁধগুলি মেরামতির কাজ শুরু হল না।
শিলাবতী, কংসাবতী-সহ অন্যান্য নদীর উপর মোট ১৫৩ কিলোমিটার নদীবাঁধের সিংহভাগের অবস্থা খারাপ। বর্ষার শুরুতে বৃষ্টি ও সেইসঙ্গে জলাধারগুলি থেকে ছাড়া জলেই প্রতাপপুরের বাঁধ ভেঙেছিল। এখনও বর্ষার মরসুম শেষ হয়নি। সেচ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ভাঙা বাঁধ মেরামতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল বাঁধগুলি যুদ্ধাকালীন তৎপরতায় সংস্কার করা না হলে ঘাটাল ফের প্লাবন কেউ ঠেকাতে পারবে না।’’
সেচ দফতর সূত্রে খবর, প্রতাপপুরে ১৬০ মিটার বাঁধের মধ্যে ১২০ মিটার মেরামতির কাজ প্রায় শেষ। নদীর জল বিপদ সীমার কাছাকাছি থাকলে জল ধরে রাখতে সক্ষম হবে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য কাজে দেরি হচ্ছে।
সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগ) অনীশ ঘোষ বলেন, “দুবর্ল বাঁধগুলি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। প্রতাপপুরে প্রাথমিক পযার্য়ের বাঁধ মেরামতির কাজও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।” তাঁর আশ্বাস, “আগের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে জন্য আমরা সতর্ক। ঘাটালবাসীর চিন্তার কিছু নেই।”