ডুবেছে ধান, আনাজের খেত

ক্ষীরাই-চণ্ডীয়া ফুঁসছে, উদ্বেগ

তবে বৃষ্টি থেমে গেলেও স্বস্তিতে নেই চাষিরা। রবিবার থেকে নিম্নচাপের রেশ কেটে গেলেও জেলার পাঁশকুড়া ও ময়না ব্লকের ক্ষীরাই, কাঁসাই এবং চণ্ডীয়া  নদীর জলস্তর বৃদ্ধি নতুন করে চিন্তা বাড়িয়েছে চাষিদের।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪১
Share:

হাউরে ডুবেছে ধানগাছ

নিম্নচাপের কারণে ভারী বৃষ্টিপাতে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধান, পান, ফুল ও আনাজ খেতে জল জমে ইতিমধ্যেই ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের হিসাবে ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর, তিনদিনেই জেলায় ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা এই সময়ে অস্বাভাবিক তো বটেই, চাষের পক্ষে বিপজ্জনক। অসময়ের এই বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শীতের ধান, আনাজের পাশাপাশি পান ও ফুল চাষেরও।

Advertisement

তবে বৃষ্টি থেমে গেলেও স্বস্তিতে নেই চাষিরা। রবিবার থেকে নিম্নচাপের রেশ কেটে গেলেও জেলার পাঁশকুড়া ও ময়না ব্লকের ক্ষীরাই, কাঁসাই এবং চণ্ডীয়া নদীর জলস্তর বৃদ্ধি নতুন করে চিন্তা বাড়িয়েছে চাষিদের।

ক্ষীরাইয়ের গা ঘেঁষে রয়েছে পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুর পঞ্চায়েতের শেরহাটি, উড়িয়াগড়, পাওবাকি, মেঘাডাঙর, বাখরাবাজ, দোকান্ডা বেগুনবাড়ি এবং হাউর পঞ্চায়েতের গোবিন্দচক, টিকরপাড়া, কালীদান, হরশঙ্করপুর, শরিফাবাদ ও চৈতন্যপুর-২ পঞ্চায়েতের বিজয়রামচক গ্রাম। জলস্তর বাড়ায় নদীর জল জমিতে ঢুকে আমন ধান, আনাজ ও ফুল চাষ ডুবিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই সব এলাকার চাষিরা। ঘোষপুরের টিকরপাড়া গ্রামের আশিস মাইতি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টির জেরে আমন ধান, আনাজ চাষের জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে ধানের ও আনাজের চারার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। ভেবেছিলাম বৃষ্টি কমে গিয়েছে। এ বার জমি থেকে জল নামবে। কিন্তু বিধি বাম। ক্ষীরাই নদীর জল বাড়ায় জমিতে জল আরও বেড়েছে। কী হবে জানি না?’’

Advertisement

কালীদান গ্রামের বিশ্বজিৎ অধিকারীর কথায়, ‘‘রবিবার সকাল থেকে ক্ষীরাই নদীর জল বেড়ে গিয়ে চাষের জমিতে ঢুকতে শুরু করেছে। ধান জমিতে আগের চেয়ে প্রায় ৪ ফুট জল বেড়ে গিয়েছে। আড়াই বিঘে জমির ধান জলের তলায়।’’ শুকদেব সামন্ত বলেন, ‘‘৬ কাঠা জমিতে মূলো ও ৮ কাঠা জমিতে বাঁধাকপির চারা লাগিয়েছিলাম। নদীর জল ঢুকে সব পচে গিয়েছে। বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’

কাঁসাই নদীর সঙ্গে যুক্ত চণ্ডীয়া নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ময়না ব্লকের বলাইপন্ডা এলাকার সুদামপুর, রামচক, জায়গিরচক প্রভৃতি গ্রামের ধান, আনাজ চাষের জমি ডুবেছে। স্থানীয়া বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতে কাঁসাই নদীর জলস্তর বেড়েছে। সেইসঙ্গে ওই নদীর সঙ্গে যুক্ত ক্ষীরাই ও চণ্ডীয়া নদীরও জলস্তর বাড়ায় অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টির জেরে কাঁসাই, ক্ষীরাই ও চণ্ডীয়া নদী জলস্তর বাড়ায় পাঁশকুড়া ও ময়না ব্লকের নদীর চর এলাকায় বহু জমিতে জল ঢুকে ধান, ফুল ও আনাজ চাষের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। তবে সোমবার থেকে ওই সব নদীর জলস্তর আর বাড়েনি। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় আশা করা হচ্ছে নদীর জল দ্রুত নামবে। জল নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন