সমাবেশে বাস, দিনভর ভোগান্তি দুই জেলায়

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৬ ০০:৫২
Share:

বাস কম। সুনসান মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড। বৃহস্পতিবার। ছবি:সৌমেশ্বর মণ্ডল।

ভরসা শুধুই দু’চাকা। স্কুল ছাত্র বা অফিস যাত্রী, যাঁরা পথে বেরিয়েছেন তাঁরা প্রায় সকলেই নিজের সাইকেল বা মোটর বাইক নিয়েই বেরিয়েছেন। আবার ৫০-৬০ কিলোমিটার বা তারও বেশি রাস্তা মোটর বাইকে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি অনেকে। বাধ্য হয়েই বাড়িতে থেকেছেন সারাদিন।

Advertisement

তৃণমূলের শহিদ সমাবেশে যোগ দিতে কর্মী সমর্থকেরা কলকাতায় গিয়েছেন বৃহস্পতিবার। সে জন্য দুই মেদিনীপুরের অধিকাংশ বাসই ভাড়া নিয়েছিল দল। ফল সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। অভিযোগ, দু’দিন আগে থেকেই বিভিন্ন রুটের বাস আটকানো শুরু করে দিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির নিষেধাজ্ঞা অবশ্য ছিল। তবু নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, আগে থেকে বায়না দিয়ে সকলে বাস ভাড়া করে নিলে তাঁরা যাবেন কী করে! তাই আগে ভাগে নিজেদের কাছে বাস রেখে দিয়েছিলেন।

এই ঘটনার পর বাস মালিকেরা দাবি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঝক্কি এড়াতে যেন জেলা জুড়ে সমন্বয় রাখা হয়। এ দিন মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড ছিল সুনসান। হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলেছে। কোনটি কেশিয়াড়ি রুটে তো কোনটি ঝাড়গ্রাম বা ময়না। বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, সব রুটেই দু’একটি করে বাস চলেছে। বা বলা ভাল তৃণমূল নেতারা ওই দু’একটি বাসকে রেহাই দিয়ে বাকিগুলি তুলে নিয়েছে।

Advertisement

সাধারণ যাত্রীরাও অবশ্য বাসের আশা করেননি। তবু কয়েকজন বেরিয়েছিলেন। চন্দ্রকোনা রোড যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা প্রতাপ সরকার। তাঁর কথায়, “বাস চলবে না জেনেই সকালে বেরোইনি। ভেবেছিলাম বেলায় হয়তো দু’একটা বাস পাওয়া যাবে। কিন্তু বাসস্ট্যান্ড তো ফাঁকা।” বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি স্বীকার করেছন, “বেশিরভাগ বাসই এ দিন সমাবেশে গিয়েছিল। তবে আমরা সব রুটেই দু’তিনটি করে বাস চালানোর চেষ্টা করেছি। যাতে ন্যূনতম যাত্রী পরিষেবাটুকু দিতে পারি।” তাঁর দাবি, সব মানুষই জেনে গিয়েছিলেন বাস সমাবেশে যাবে। ফলে বেশিরভাগ মানুষই বাইরে বেরোননি।

কাঁথি মহকুমাতেও সারাদিন পরিবহণ সঙ্কট। সকাল থেকে খুব কম বাসই চলেছে বলে নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ। বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘক্ষণ প্রতীক্ষা করে যে ক’টি বাসের দেখা মিলেছে, তাতে বাদুড়ঝোলা ভিড়। তৃণমূলের শহীদ সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার জন্য কাঁথি মহকুমা থেকে ষাটটিরও বেশি বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে সরকারি বাস নিয়ম মাফিক চলেছে বলে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এসবিএসটিসি) দিঘা ডিপো সূত্রে জানা গিয়েছে। ডিপো ইনচার্জ অনিমেষ দত্ত জানান কলকাতা, হাওড়া সহ-রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ৮৮টি বাস অন্যান্য দিনের মতই যাতায়াত করেছে। এর জেরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত পার্ট-১ পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আগেই ঘোষণা করেছেন ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে ৬অগস্ট।

জখম ১২। তৃণমূলের সভা সেরে ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় আহত হলেন ১২জন। বৃহস্পতিবার বিকালে দাসপুর থানার সুলতাননগরের এই দুর্ঘটনায় জখমদের চিকিৎসা চলছে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। এর মধ্যে একজন স্থানীয় এক বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চন্দ্রকোনা থানার বেলাদণ্ড গ্রামের তৃণমূল সমর্থকরা পিকআপ ভ্যান চেপে কলকাতায় দলীয় সভা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে সুলতাননগরের কাছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন