স্লুইস গেট সংলগ্ন এলাকায় জোয়ারের জল ঢুকছে। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি আর জোয়ারের জোড়া ফলায় বিদ্ধ হলদিয়ার নিকাশি।
হলদিয়ার তিন পাশেই নদী। জোয়ারের সময় ওই সব নদী দিয়ে জল ঢোকে শহরের বিভিন্ন নিকাশি নালার মধ্যে। আবার ভাটার সময় জল নামাতে বিভিন্ন স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়। এটাই দস্তুর। কিন্তু অভিযোগ, চলতি বর্ষায় এমনটি আর হচ্ছে না। তাতেই কার্যত ঘুম উড়েছে পুরসভার নিকাশির সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের।
ওই ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখে গিয়েছে, হলদিয়া বন্দরের একাধিক স্লুইস গেটের অবস্থা জীর্ণ। আর খারাপ স্লুইস গেটের কারণেই ‘বটল নেক’ হয়ে থমকে যাচ্ছে শহরের নিকাশি।
কোথায় কোথায় স্লুইস গেট খারাপ?
হলদিয়ায় পুরসভার সাফাই সুপার ভাইজার অলোক চন্দ বলেন, ‘‘টাউনশিপে হলদি নদীর তীরে ভাঙা জেটির কাছে থাকা স্লুইসটির অবস্থা জীর্ণ। জোয়ার-ভাটার সময়ে সেটি কাজ করে না। বন্দর সংস্থার কেউই ওই গেট খোলা আর বন্ধ করার কাজ করতে আসেন না।’’ অলোকবাবুর কথায়, ‘‘গেটে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় জল ঢুকলেও সহজে বেরোচ্ছে না। এতে পুর এলাকার পদ্মপুকুর, স্টেট ব্যাঙ্ক বস্তি, বনলতা-সহ নানা যায়গায় জল জমে থাকছে।’’
স্লুইস গেটগুলি মেরামতির দায়িত্ব কার, সে নিয়েও ধন্দ রয়েছে বন্দর এবং সেচ দফতরের মধ্যে। এই বিষয়ে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (উন্নয়ন ও নিকাশি) নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘হলদিয়ার পাতিখালি-সহ একাধিক জায়গায় বন্দরের স্লুইস গেট রয়েছে। বন্দর সেই গেট মেরামত করছে না।’’
সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রঘুনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হলদিয়ায় বেশ কিছু স্লুইস গেট বন্দর এলাকায় রয়েছে। সেগুলি সারানো আমাদের দায়িত্ব নয়। আমাদের জায়গায় থাকা গেটগুলির মেরামতির বিষয়ে আমরা শীঘ্রই উদ্যোগী হব। সমীক্ষার কাজ চলছে। সমীক্ষার কাজ শেষ হলেই কাজ শুরু করা হবে।’’
হলদিয়া পুরসভার পারিষদ সদস্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা স্বপন নস্কর বলেন, ‘‘পুর এলাকার ১, ২, ৩, ৫, ৬, ৭, ৯ ওয়ার্ডের নিকাশির সঙ্গে যুক্ত খালগুলি সংস্কার করা হয়েছে। প্রতিটি খালের সঙ্গে সংযোগ রাখা স্লুইস গেটের সংস্কার করলেই শহরের নিকাশিতে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’’
স্লুইস গেট সংস্কার প্রসঙ্গে হলদিয়ায় বন্দর সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) অমল দত্ত বলেন, ‘‘ক্লাস্টার-ফোর এ থাকা একটি গেট সংস্কার করে বন্দর। বন্দর সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন অন্য স্লুইস গেট রয়েছে কি না, তা ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে জেনে বলতে হবে।’’