তাজপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ তুললেন হোটেল মালিকরা। তাঁদের অভিযোগ, কোনও রকম সিজার লিস্ট ছাড়াই ১১টি হোটেল থেকে রেজিস্টার তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে নোটিস দিয়ে গিয়েছে হোটেলের আইনি কাগজপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে। হোটেল মালিকদের দাবি, এই নোটিস দেওয়ার অধিকার নেই পুলিশের। আন্দোলনে নামার হুমকি দিচ্ছেন হোটলে মালিকরা।
অভিযোগ, বুধবার রাতে মন্দারমণি কোস্টাল থানার পুলিশ তাজপুরের হোটেলগুলোতে অভিযান চালায়। ১১ টি হোটেলের রেজিস্টার খাতা বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়। তেমনই এক হোটেলের মালিক অনুপম চক্রবর্তীর দাবি, পর্যটকদের দিয়েই রেজিস্টার পূরণ করান হোটেলকর্মীরা। সে সময় দেখে নেওয়া হয় ভোটার কার্ড বা আধার। এ রকমই নিয়ম সারা ভারত বর্ষে। কিন্তু তাও পুলিশ বলেছে, নিয়ম মানা হচ্ছে না। তাঁর দাবি, অনেক সময়ই পর্যটক নিজের পুরো নাম না লিখে সংক্ষেপে স্বাক্ষর করেন। সেটা তো বেআইনি নয়। তাজপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল দাস বলেন, ‘‘পুলিশের এমন কার্যকলাপে আখেরে মার খাবে পর্যটন ব্যবসা। বুধবারের পর যে সব পর্যটক এসেছেন তাঁদের তথ্য কোথায় রাখা হবে?’’
খাতা বাজেয়াপ্ত করার কথা অস্বীকার করেছে মন্দারমণির পুলিশ। তবে পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, হোটেলগুলোর সব আইনি কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য মন্দারমণি ও তাজপুরের হোটেলগুলোতে নোটিস দেওয়া হয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।
হোটেল মালিকরা প্রশ্ন তুলছেন সেখানেও। পুলিশ এ ভাবে নোটিস দিয়ে সব কাগজপত্র দেখার জন্য ডাকতে পারে না। এটা পুলিশের এক্তিয়ার নয়। স্থানীয় ব্লক, পঞ্চায়েত বা দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাজ এটা। মালিকদের একাংশের দাবি, অকারণে পুলিশি হেনস্থার ফলে হোটেলে কাজ করতে চাইছেন না কর্মীরা। পর্যটকরাও ভয় পাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল কর্মী বললেন, ‘‘পুলিশ হোটেল থেকে টাকা তোলে। কোনও হোটেল থেকে নিয়মিত টাকা না পেলেই পুলিশ এমন ভাবে হেনস্থা করে।’’ এ রকম চলতে থাকলে হোটেল মালিকরা ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পথে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
একই কথা শুনিয়েছেন, ‘দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়াস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “পুলিশ নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে। এটা পর্যটন শিল্পের পক্ষে কাম্য নয়।’’ যদিও এ নিয়ে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু মুখ খুলতে চাননি। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার হোটেল মালিকদের নিয়ে মন্দারমণি কোস্টাল থানায় যাবেন বলে জানিয়েছেন তাজপুর হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল দাস। সেখানে সুবিচার না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার কথা বলন তাজপুরের হোটেল মালিকরা।