bengal flood

Bengal flood: বৃষ্টিতে কৃষিতে ক্ষতি প্রায় পাঁচশো কোটির

ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৪৭৫ কোটি টাকা। জমি থেকে জল নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২১ ০৫:২৯
Share:

জলে ডুবে নষ্ট হয়েছে বেগুন গাছ। ঘাটালের মনসুকায়। নিজস্ব চিত্র।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ধাক্কা সামলে ওঠা যায়নি। তার মধ্যেই অতিবৃষ্টি এবং তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি যেন কোমর ভেঙে দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেরর বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিজীবীদের। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, প্রায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৪৭৫ কোটি টাকা। জমি থেকে জল নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, মাঠে নেমে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি শুরু হয়েছে। কোথায় কী ক্ষতি হয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, ‘‘ব্লকগুলি থেকে কৃষিক্ষেত্রের ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।’’ জেলার সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) দেবকান্ত পান্ডার কথায়, ‘‘এখনও কিছু জমিতে জল জমে রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর আছে।’’

জেলায় সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই প্রায় ১ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২৮-৩০ জুলাই, এই তিনদিনেই প্রায় ২৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। চাষের জমি এখনও জলমগ্ন। মাথায় হাত চাষিদের কেশপুরের স্বপন দাস বলছিলেন, ‘‘প্রায় ৪০ বিঘার মতো জমির ধান, আনাজ সব জলের তলায় চলে গিয়েছে। প্রচণ্ড ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ২০০ জন চাষি রয়েছে এই এলাকায়।’’ তাঁর হাহাকার, ‘‘এ বার কী ভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না।’’ জেলার সব ব্লকেই অতিবৃষ্টি হয়েছে। তবে কৃষি ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে মূলত ৮টি ব্লকে। সেগুলি হল কেশপুর, ঘাটাল, দাসপুর- ১ এবং ২, চন্দ্রকোনা- ১ এবং ২, মেদিনীপুর সদর এবং গড়বেতা- ১।

Advertisement

কৃষি দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে, জল জমে ওই ৮টি ব্লকের ৪৪,২৩৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমবেশি ১,৪৩৮টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু জমিতে বীজতলা লাগানো হয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে, ওই ৪৪,২৩৫ হেক্টরের মধ্যে ৩,৫৪১ হেক্টরে ছিল বীজতলা। ৩৬,৭৫৯ হেক্টরে ছিল খরিফ মরসুমের ধান, ৯০ হেক্টরে ছিল চিনাবাদাম, ৩৯০ হেক্টরে ছিল পাট। এবং ৩,৪৫৫ হেক্টরে ছিল আনাজ-সহ অন্য ফসল। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪৭৫ কোটি ৪৮ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা।

সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত জমি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) দুলাল দাস অধিকারী। জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলছিলেন, ‘‘দিন কয়েক টানা বৃষ্টি হয়েছে। যে জমিতে সচরাচর জল জমে না, এ বার সে জমিতেও জল জমেছে।’’ ক্ষতিপূরণের কী হবে? জেলার এক কৃষি আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘অনেকেরই শস্যবিমা করা রয়েছে। তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এরপর সরকার যেমন ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করবে, সেই মতো দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন