জেল পরিদর্শনে কারাকর্তারা

মুক্ত সংশোধনাগারের সিদ্ধান্ত মেদিনীপুরে

মেদিনীপুরে হবে মুক্ত সংশোধনাগার। বৃহস্পতিবার কারা দফতরের পদস্থ কর্তারা জেল পরিদর্শন করেন। ছিলেন এডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্ত, কারা দফতরের প্রধান সচিব শিবাজী ঘোষ প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৮
Share:

সার্কিট হাউসের বৈঠক। — নিজস্ব চিত্র।

মেদিনীপুরে হবে মুক্ত সংশোধনাগার। বৃহস্পতিবার কারা দফতরের পদস্থ কর্তারা জেল পরিদর্শন করেন। ছিলেন এডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্ত, কারা দফতরের প্রধান সচিব শিবাজী ঘোষ প্রমুখ।

Advertisement

জেল পরিদর্শনের সময়ই মুক্ত সংশোধনাগার গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সারেন কারা-কর্তারা। পরিকাঠামোগত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেন তাঁরা। পরে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে এক বৈঠকে দফতরের প্রধান সচিব শিবাজী ঘোষ বলেন, “মেদিনীপুরে মুক্ত সংশোধনাগার গড়ে তোলার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে।” শুধু মেদিনীপুর নয়, এডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্তও জানান, আগামী দিনে রাজ্যে মুক্ত সংশোধনাগার বাড়ানোর চেষ্টা হবে।

এখন রাজ্যে তিনটি মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে। দুর্গাপুর, রায়গঞ্জ এবং লালগোলায়। মুক্ত সংশোধনাগারে নির্দিষ্ট সংখ্যক বন্দিকে এখানে রাখা হয়। আচার-আচরণ দেখে মূলত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে থেকেই তাঁদের চিহ্ণিত করা হয়। যাঁরা বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পান। যেমন বন্দিরা চাইলে জেল থেকে বেরোতে পারেন। জেলের বাইরে এসে কাজকর্ম করতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট সময় ফের তাঁদের জেলের মধ্যে চলে যেতে হবে। কখনও বেরোবেন, কখনও ঢুকবেন, সেই সময় জেল-কর্তৃপক্ষই ঠিক করে দেবেন।

Advertisement

কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন, মাস কয়েক পরেই ছাড়া পাবেন, আচার-আচরণ দেখে তাঁদেরই কয়েকজনকে মুক্ত সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয়।’’ রাজ্যের তিনটি মুক্ত সংশোধনাগারে এখন প্রায় ১২০ জন রয়েছেন। শিবাজীবাবু বলেন, “জীবিকা অর্জনের জন্য এঁরা বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করেন। কেউ রঙের কাজ, কেউ কাঠের কাজ করেন।”

বৃহস্পতিবার সকালে মেদিনীপুরে আসেন কারা-কর্তারা। যান মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। ছিলেন পূর্ত দফতরের পদস্থ কর্তারাও। জেলে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ পূর্ত দফতরের মাধ্যমে করা হয়। এ দিন সেই কাজগুলোরই পর্যালোচনা হয়। কী কী পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে, কাজ এগোতে কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়।

ঝাড়গ্রাম মহকুমা জেলকে জেলা জেলে উন্নীত করা হবে। সে বিষয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে শিবাজীবাবু বলেন, “ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হতে চলেছে। ওখানে ঝাড়গ্রাম জেলা সংশোধনাগার হবে।” সম্প্রতি ভিন্ রাজ্যের একাধিক জেলে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে।

মেদিনীপুর জেলে প্রায় ১২০০ বন্দি থাকেন। এখানে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। জেলের নিরাপত্তা নিয়েও মাঝেমধ্যে প্রশ্ন ওঠে। শুধু তো মাওবাদী সন্দেহে ধৃত কয়েকজন নন, এখানে কুখ্যাত কয়েকজন দুষ্কৃতীও রয়েছে।

এক কারা-কর্তা মানছেন, “আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় প্রয়োজনীয় সব কিছু হয়তো এখনই করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ধীরে ধীরে করা হবে। কয়েকটি কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেইগুলো খুব ব্যয়সাপেক্ষ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন