পরখ: এটিভি-তে চড়ে দেখছেন পুলিশ সুপার। —নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপকূল থানাগুলিতে এ বার পুলিশের টহলদারিতে দেখা যেতে পারে এটিভি বাইক (অল ট্রেন্ড ভেহিকেলস)-এর।
গত ১২ মে দিঘার সৈকতে এই বাইকের উদ্বোধন করেছিলেন কাঁথির সাংসদ ও দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)- র সভাপতি শিশির অধিকারী। একটি বেসরকারি সংস্থার এই বাইক সৈকতে মূলত পর্যটকদের বিনোদনের জন্য ব্যবহার করা হত বলে ডিএসডিএ-র তরফে জানানো হয়েছে। এ বার রাজ্যের উপকূল এলাকাগুলিতে দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের বিরুদ্ধে টহলদারি এবং পর্যটকদের উদ্ধারে কী ভাবে ওই বাইক কাজে লাগানো যায় তা দেখছে প্রশাসন। এ ব্যাপারে বুধবার সরেজমিন দিঘা সৈকতে এসেছিলেন রাজ্যের কোস্টাল পুলিশের এক প্রতিনিধিদল। উপকূল পুলিশের এডিজি হরমোহনপ্রিত সিংহ, আইজি কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়-সহ অন্য আধিকারিকরা এদিন দিঘার সৈকতে হলিডে হোম ঘাটে গিয়ে এটিভি বাইক পরীক্ষামূলক ভাবে চালিয়ে দেখেন। ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার আলোক রাজোরিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু, দিঘা থানার ওসি বাসুকি বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলার পুলিশ সুপার বলেন, “এই বাইক উপকূল পুলিশ দফতরের উপযোগী কি না, বা এর গতি কেমন, কতটা দূষণমুক্ত, টহলদারি বা পর্যটক উদ্ধারে কাজে লাগবে কি না সবই খতিয়ে দেখা হয়েছে। উপকূল পুলিশের প্রতিনিধি দল ফিরে গিয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
এ ধরনের বাইক উপকূল থানা এলাকাগুলিতে চালু হলে পুলিশের কী সুবিধা হবে তা এ দিন প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে দিঘা থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওল্ড দিঘা থেকে ওডিশার সীমানা লাগোয়া উদয়পুর পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। সমুদ্র সৈকতের এই এলাকায় কোথাও কোনও দুর্ঘটনা হলে পুলিশকে সড়ক পথে ঘুরে যেতে হয়। কারণ সৈকতে যান চলাচল নিষিদ্ধ। সে ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়। কিন্তু সৈকত বরাবর পৌঁছনোর উপায় থাকলে কাজ অনেক সহজ হয়। তা ছাড়া বতর্মানে সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া কোনও পর্যটককে নুলিয়া এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধার করলে তাঁকে নুলিয়া বা পুলিশের কাঁধে চাপিয়ে প্রধান রাস্তা পর্যন্ত আনা হয়। সেখানে রাখা পুলিশের গাড়িতে দিঘা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয়। এটিভি বাইক চালু হলে সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া কাউকে উদ্ধারের পর দ্রুত তাঁকে সৈকত থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। সে ক্ষেত্রে শুধু দিঘা নয়, রাজ্যের সব উপকূল থানায় এই বাইকের দেখা মিলবে।
যে বেসরকারি সংস্থার এই বাইক তার তরফে রত্নদ্বীপ বোস বলেন, ‘‘এই বাইক পরিবেশ দূষণ ঘটাবে না। পেট্রোলে চলবে। এর রবারের চাকা সৈকতের বালির জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি। তাই সৈকতে দ্রুত ছুটতে পারে। পুলিশের টহলদারি এহং পর্যটক উদ্ধারে উপযোগী হবে।’’