রাজবাড়ির আম্রকুঞ্জে বসন্ত উৎসব, পর্যটনে উদ্যোগী প্রশাসন

মহিষাদল রাজবাড়ির ঐতিহ্য আর বিরাট আম্রকুঞ্জের মাঝে দোল উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। আর এই উৎসবকে ঘিরেই মহিষাদলকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৩
Share:

মহিযাদল রাজবাড়ি লাগোয়া এই আম্রকুঞ্জেই বসবে বসন্ত উৎসবের আসর। নিজস্ব চিত্র

‘খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল’।

Advertisement

মহিষাদল রাজবাড়ির ঐতিহ্য আর বিরাট আম্রকুঞ্জের মাঝে দোল উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। আর এই উৎসবকে ঘিরেই মহিষাদলকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন। এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে দোলে সকলেরই চাহিদা থাকে শান্তিনিকেতন। কিন্তু দিন দিন ভিড় বাড়ার কারণে অনেকেই এখন বিকল্পের খোঁজে। সেই সব মানুষদের টানতেই সেজে উঠছে তমলুকের মহিষাদল রাজবাড়ি সংলগ্ন আম্রকুঞ্জ। যার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে তিনশো বছরের প্রাচীন রাজবাড়ি, দুর্গামন্দিরের আটচালা, গোপাল জিউ-এর মন্দির, পিরের দরগা। অপেক্ষা মাত্র দিন কয়েকের। তারপরেই আম্রকুঞ্জ মেতে উঠছে মানুষের কলকাকলিতে, গানে, নৃত্যে। আম্রকুঞ্জের আকাশ ভরবে রামধনুতে।

প্রায় দেড়শ আমগাছের মাঝে রাজাদের টেনিস খেলার জন্য ফাঁকা জায়াগায় তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। সারা রাজ্য থেকে এখানে মানুষ আসেন দোল উৎসবে মেতে উঠতে। বেহালার ‘নক্ষত্র ড্যান্স’, গড়িয়ার ‘আনন্দসঙ্গী’, বারুইপুরের ‘তাঞ্জোড়’, উত্তরপাড়ার ‘ঘুমুর’, কোন্নগরের ‘আনন্দবিতান’, হলদিয়ার ‘নিক্কন’, নন্দীগ্রামের ‘মোহিনী’ থেকে কাঁথির ‘সৃষ্টি সুরঙ্গম’ কে নেই সেই উৎসবে।

Advertisement

মহিষাদলের সাংবাদিক, লেখক, শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীদের একটি সংগঠনের উদ্যোক্তা সঞ্জীব দুবে জানান, মূলত এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দোলের পরম্পরা বজায় রাখা হয়। আবির ছাড়া আর কোনওরকম রঙের ব্যবহার নিষেধ। দিনভর আম্রকুঞ্জের মাঝে নাচ-গানের পাশাপাশি রাজবাড়ি ঘুরে দেখার মজাই আলাদা। সঙ্গে রয়েছে গেঁওখালিতে ত্রিবেণি সঙ্গম বেড়িয়ে আসার সুযোগ। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ভোলানাথ বিজলি জানান, দোলের দিন বিকেলে হলদিয়ার ‘শ্রুতি’ মূক ও বধির স্কুলের কৃতি মেয়েদের সম্মান জানানো হবে।

দোলের অনুষ্ঠান নিয়ে মহিষাদল রাজবাড়ির সদস্য শৌর্যপ্রসাদ গর্গ বলেন, ‘‘ছোটবেলায় দেখেছি রানিমা-র মায়ে আবির দিয়ে উৎসব শুরু হতো। ফের যেন নতুন করে প্রাণ ফিরেছে উৎসবের।’’

পর্যটনের এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ স্থানীয় প্রশাসনও। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাইরে থেকে বহু মানুষ আসছেন উৎসবে সামিল হতে। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বিভিন্ন গেস্ট হাউসে।’’ তিনি জানান, মহিষাদল রাজবাড়ি ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে। দোল উৎসবের মাধ্যমে পর্যটকদের কাছে সেই সম্ভাবনাকে তুলে ধরাই লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন