পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাথী মনোনয়নকে কেন্দ্র করে মারধর ও সন্ত্রাসের অভিযোগে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে অশান্তি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির চাপানউতোর ততই বাড়ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এবার যুযুধান তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই মারধর, গোলমালের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। তবে ২ এপ্রিল থেকে মনোনয়ন শুরুর পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন জমার ক্ষেত্রে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে বিজেপি। জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির ৬৬১টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তৃণমূল মনোনয়ন জমা দিয়েছে ৫২টিতে। বামেরা ৯৪টিতে এবং বিজেপি ২১২টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। একই ভাবে ৩ হাজার ৭৮টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে তৃণমূল ৩৬২, বামেরা ৩৯৯টিতে প্রার্থী দিলেও বিজেপির ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা ১১৬৮টি।
বিজেপি সূত্রেই খবর, গতবারের চেয়েও এবার এখনও পর্যন্ত দলের তরফে বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে। যেখানে তাঁরা মনোনয়ন জমা নিয়ে প্রতিদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করছেন তারপরেও এত বেশি সংখ্যা মনোনয়ন জমা পড়ার কারণ কি? তা হলে কী পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির
সংগঠন বাড়ছে?
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিজেপির তমলুক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘গত দেড় বছর ধরে বুথস্তরে সংগঠন গড়ে তুলতে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল। বুথের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ ও বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে স্থানীয় সমস্যাগুলি তুলে ধরার পাশাপাশি প্রচারে কেন্দ্রের সমস্ত জনকল্যাণমূলক প্রকল্প সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এর ফলে প্রচুর মানুষ দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।’’
সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, তৃণমূলের নীচুতলার নেতাদের দুনীতি, তোলাবাজি নিয়ে ক্ষুব্ধ বহু দলীয় কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবার তাঁরা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন। এ বার সেটা এখনও পর্যন্ত প্রায় ৯০ শতাংশ।
যদিও মনোনয়ন জমার পরিসংখ্যানে বিজেপির এগিয়ে থাকা নিয়ে নিজেদেরই কৃতিত্ব দিয়েছে তৃণমূল। জেলার তৃণমূল নেতাদের দাবি, এতেই বোঝা যায় মনোনয়ন জমা দিতে গেলে তাদের প্রার্থীদের তৃণমূলের লোকজন মারধর করছে বলে বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা ভিত্তিহীন। পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূল সন্ত্রাস করলেও তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা ভয় পেয়ে জমি ছাড়তে নারাজ। সেই কারণেই মারের ভয় উপেক্ষা করেই তাঁরা মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন।