অনুশ্রী কর। নিজস্ব চিত্র
প্রথমবার ভোটযুদ্ধে নেমেই পড়তে হয়েছিল কঠিন লড়াইয়ে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বাধা টপকে ত্রিমুখী লড়াইয়ে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে জিতেছেন অনুশ্রী কর। মাওবাদী হিংসায় নিহত জলদবরণ করের স্ত্রী অনুশ্রীর জেতার পরও তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে।
দ্বন্দ্বের কারণ, সভাপতির পদ। অনুশ্রীকে ‘শহিদ পত্নী’র মর্যাদা দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ১৬ নম্বর আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ে তেরোশো ভোটের ব্যবধানে অনুশ্রী জয়ী হয়েছেন। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদটি মহিলা সাধারণ প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত। অনুশ্রীর জয়ের পর দলের একাংশ অনুশ্রীকে সভাপতি পদে বসানোর জন্য দাবি তুলেছেন। এ বার বেলপাহাড়ি ব্লকের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে শাসকদলের ভোট ব্যাঙ্কে কার্যত ধস নেমেছে। এই আবহে কোনও আদিবাসী মহিলাকে সভাপতি করার জন্যও সওয়াল শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিদায়ী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশীবদন মাহাতোর গোষ্ঠী চাইছেন তাঁদের গোষ্ঠীর কোনও মহিলা প্রার্থীকে সভাপতি করা হোক। অনুশ্রী বলছেন, “দলের জেলা ও রাজ্য নেতাদের কথায় প্রার্থী হয়ে জিতেছি। এর বেশি কিছু নয়।” বংশীবদনবাবু অবশ্য বলেন, “ওখানে সাধারণ মহিলা প্রার্থীই সভাপতি হবেন। তবে কে সভাপতি হবেন, সেটা দল ঠিক করবে।” বেলপাহাড়ি ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি বিকাশ সিংহ বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে দশজন মহিলা আছেন। দলনেত্রীর নির্দেশে ওই দশজনের মধ্যে কাউকে সভাপতি করা হবে।” দলের এক জেলা নেতা বলেন, “বেলপাহাড়িতে ‘দিদির প্রার্থী’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে আছেন বলেই তো জানি।” ২০০৯ সালের অক্টোবরে খুন হন জলদবরণ। অনুশ্রীকে বেলপাহাড়ি ব্লক যুব তৃণমূলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেন মমতা। ভোটের আগে বংশীবদনবাবুর ডানা ছাঁটা হলেও অনুশ্রীকে হারানোর জন্য তাঁর আসনে বংশী-গোষ্ঠী গোঁজ প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে গোঁজ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।