গোঁজ সরাতে হিমশিম শাসকদলের

দলীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিরোধী বিজেপি এবং কংগ্রেসের তুলনায় দলের বিক্ষুব্ধদের বোঝাতেই হিমশিম খেয়ে যান ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। গোঁজ সরাতে বেগ যে পেতে হয়েছে, তা কার্যত স্বীকার  করেছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মেঘনাথ পালও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ১১:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীশূন্য করার ডাক দিয়েছিল শাসকদল তৃণমূল। বিরোধীদের মারধর এবং হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ বেলায় নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়ায় দেখা গেল অন্য চিত্র। কয়েকটি আসনে নিজেদের দলের গোঁজ প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়েই ‘নাস্তানাবুদ’ হল শাসকদল।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিরোধী বিজেপি এবং কংগ্রেসের তুলনায় দলের বিক্ষুব্ধদের বোঝাতেই হিমশিম খেয়ে যান ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। গোঁজ সরাতে বেগ যে পেতে হয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করেছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মেঘনাথ পালও। উল্লেখ্য, গোকুলনগর, কেন্দেমারি, মহম্মদপুর, নন্দীগ্রাম অঞ্চলে একাধিক বুথে প্রার্থী হিসাবে মনোননয়ন দিয়েছিলেন শাসকদলের একাধিক কর্মী-সমর্থক।

অনেকাংশে ওই গোঁজ প্রার্থীদের বোঝাতে সফল হলেও বেশ কিছু আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাইছিলে না বিক্ষুব্ধরা। তবে শনিবার নন্দীগ্রামের চার, কেন্দেমারির দুই, এবং গোকুলনগরের এক জন গোঁজ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ১৪০টি মধ্যে ১৩৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে দখল নিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্লক নেতা এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘এত মান–অভিমান সামাল দেওয়া মুশকিল হচ্ছে। যাই হোক, অনেক কষ্টের পরে দলের অধিকাংশ গোঁজেরা মনোনয়ন তুলেছেন। তবে কেন্দেমারি অঞ্চলে দু’একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনে গোঁজ রয়েই গিয়েছে।’’ ওই ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টির মধ্যে ২৯টিতে মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। বাকি একটি আসনে ‘লড়াই’ হবে শাসক বনাম গোঁজের।

অন্য দিকে, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে আমদাবাদ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে কয়েকটি আসনেও মনোনয়ন দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধেরা। শেষ দিনে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়। তবে ওই ব্লকে বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির ২০টির মধ্যে ১৪টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯১টির মধ্যে ৭৪টি আসনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াবে বিজেপি।

হলদিয়া ব্লকেও একই পরিস্থিতি। দেভোগ, বাড়–উত্তরহিংলি, দেউলপোঁতা অঞ্চলে শাসকের ‘গলার কাঁটা’ হয়েছিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ দিন ওই ব্লকে শুধু গোঁজ ৭০জন মনোনয়ন তুলেছেন। যদিও বাড় উত্তরহিংলি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক আসনে তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

এ নিয়ে ব্লক যুব তৃণমূল নেতা যশোরাজ ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘সারা রাত ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। পুলিশ এবং প্রশাসন পাশে দাঁড়ায়নি। তাই ভয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’’ যদিও, ওই ‘তাণ্ডবে’র অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল নেতা তথা হলদিয়া ব্লক নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক মানস কুমার দাস। তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষুব্ধদের উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আবেদন করেছিলাম। কোনও হামলা চালানো হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন