নাজিমা বেগম ও রেহানা খাতুন।
এক ভাড়া বাড়িতেই বাস। একজন থাকেন দোতলায় আর একজন তিনতলায়। সম্পর্কে তাঁরা ননদ-বৌদি। কিন্তু রাজনীতির ময়দানেই একে অন্যের ‘শত্রু’।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোলাঘাট ব্লকের গোপালনগর গ্রাম সভায় ৮২ নম্বর বুথের প্রার্থী রেহানা খাতুন এবং নাজিমা বেগম। রেহানা লড়ছেন জোড়া ঘাসফুল প্রতীকে এবং নাজিমা লড়ছেন টিউবওয়েল প্রতীকে (নির্দল)। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে তাঁদের পরিবার তৃণমূলে যোগ দেয়। এর থেকে তাঁরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতি জড়িত।
দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের হয়ে কে টিকিট পাবেন, তা নিয়ে সম্প্রতি শুরু হয় জল ঘোলা। নাজিমার দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকেই প্রার্থী করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই মতে নামও পাঠানো হয়। কিন্তু শেষে তাঁর বৌদি রেহানাকে প্রার্থী করা হয়। নাজিমার বক্তব্য, এর পরেই তিনি নির্দল হিসাবে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রাথমিকভাবে নিজেকে তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী বলে দেওয়াল লিখনও শুরু করা হয়েছিল তাঁর তরফে। পরে অবশ্য সেই অংশগুলি মুছে দেওয়া হয়।
নাজিমার বৌদি রেহানার কথায়, ‘‘সম্পর্কের দিক থেকে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। ভোটের ক’দিন হয়তো একটু মনমালিন্য হতে পারে। তবে তাতে সম্পর্কে কোনওভাবেই চিড় পড়বে না।’’ ভোট নিয়ে যে দু’জনেই খুব চিন্তিত, তা জানিয়েছেন রেহানা। রোদের তেজের মধ্যেই সকাল-সন্ধ্য প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা।
ননদ বা বৌদি— যেই জিতুক না কেন, তাঁদের ‘লড়াই’ উপভোগ করছেন স্থানীয়েরা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কে জিতবেন, জানি না, তবে এক বা়ড়িতে এমন পরিস্থিতি সচরাচর দেখা যায় না।’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই ওই বাড়িতে ওই বিভাজন।’’
ওই লড়াই প্রসঙ্গে কোলাঘাটের তৃণমূল নেতা অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল যাকে যোগ্য মনেকরেছে তাঁকেই টিকিট দিয়েছে।’’ নির্দল প্রার্থী নাজিনার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা নজর রেখেছি কিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ওই প্রার্থীকে গোপনে সহায়তা করছেন। তবে ওখানে তৃণমূলই জিতবে।’’