ফের আদিবাসী সংগঠনে ফাটল

‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন হচ্ছে আগামী ১৯ ও ২০ অক্টোবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১০
Share:

—ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের আগে স্পষ্ট হয়েছিল সংগঠনের বিভাজন। সামাজিক সংগঠনের অংশ হয়েও বিরবাহা সরেন কেন তৃণমূলের প্রার্থী হবেন, এই প্রশ্নেই দেখা দিয়েছিল মতপার্থক্য। ফের মাথাচাড়া দিয়েছে সাঁওতাল সমাজের সর্বভারতীয় সামাজিক সংগঠন—‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর অন্দরের দ্বন্দ্ব। একই দিনে পৃথক দু’টি জায়গায় হচ্ছে সংগঠনের রাজ্য ও জেলা সম্মেলন।

Advertisement

‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন হচ্ছে আগামী ১৯ ও ২০ অক্টোবর। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি হাইস্কুলে প্রথমদিন হবে প্রতিনিধি সম্মেলন। পরদিন স্কুল মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ। সংগঠনের রাজ্য নেতা (পণত পারগানা) বাদল কিস্কু লিখিত প্রচারপত্র দিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্য সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে সংগঠনের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা কমিটি। অন্যদিকে পারগানা মহলের ‘বহিষ্কৃত’ নেতা রবিন টুডু ১৯ ও ২০ অক্টোবর সংগঠনের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। মেদিনীপুর শহর লাগোয়া মহেন্দ্রডিহি এলাকায় হবে রবিনের জেলা সম্মেলন।

রবিনের দাবি, সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনিই এখনও অবিভক্ত তিন জেলার (পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও পূর্ব মেদিনীপুর) ‘জেলা পারগানা’। তাই তিনি গরিষ্ঠ অংশের দাবিতেই জেলা সম্মেলন ডেকেছেন। অন্যদিকে, রবিনের দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে রাজ্য নেতা বাদল কিস্কু বলছেন, ‘‘রবিন টুডু এখন আর সংগঠনের কেউ নন। ওঁর সম্মেলনটি অবৈধ। সংগঠনের কেউ ওখানে যাবেন না।’’ সংগঠনের উপদেষ্টা শিবশঙ্কর সরেন স্পষ্ট বলছেন, রবিন টুডু রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে পাল্টা সংগঠন তৈরি করতে চাইছেন।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ হল, দুই গোষ্ঠীরই সম্মেলনের ব্যানার ও পোস্টারে সংগঠনের সর্বভারতীয় সুপ্রিমো ‘দিশম পারগানা’ নিত্যানন্দ হেমব্রমের নাম রয়েছে। তাহলে কি দু’টি সম্মেলনেই হাজির থাকবেন নিত্যানন্দ? কারণ, সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব রাজ্য সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। অন্যদিকে, নিত্যানন্দের স্নেহভাজন রবিন জেলা সম্মেলন ডেকেছেন। নিত্যানন্দের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

রবিনের স্ত্রী বিরবাহা সরেন গত লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হন। জেলা পারগানা রবিনের স্ত্রী রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। জেলা পারগানা পদ থেকে রবিনকে বহিষ্কার করেন রাজ্য নেতৃত্ব। এরপরই সংগঠনের সুপ্রিমো নিত্যানন্দ হেমব্রম জানিয়ে দেন, রাজ্য নেতৃত্ব এভাবে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে রবিনকে বহিষ্কার করা যাবে না।

তাঁর উপস্থিতিতে এক বৈঠকে রবিন টুডুকেই জেলা পারগানা করা হয়। গত ২৮ অগস্ট রাজ্য নেতৃত্ব বালিচকে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত করে পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী রবীন্দ্রনাথ মুর্মুকে জেলা পারগানার দায়িত্ব দিয়েছেন। রবিন বলছেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নীচুস্তর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই বিধি। সেটা না করে রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে অগণতান্ত্রিক ভাবে বহিষ্কার করেন। বেশির ভাগ নেতৃত্ব আমার পক্ষে রয়েছেন। দিশম পারগানা আমাদের জেলা সম্মেলনেই আসবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন