সব গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার বায়োমেট্রিক

অফিসগুলোয় কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলাশাসক এক নির্দেশিকা জারি করেছেন। কোন অফিসে কোন সময়ের মধ্যে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করতে হবে সেই সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

শুরু হয়েছে জেলার প্রশাসনিক দফতর কালেক্টরেটে। উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়েছে। হাতেনাতে মিলেছে ফলও। কর্মীদের হাজিরা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ বার জেলার সমস্ত এসডিও অফিস, বিডিও অফিস এবং গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অফিসগুলোয় কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলাশাসক এক নির্দেশিকা জারি করেছেন। কোন অফিসে কোন সময়ের মধ্যে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করতে হবে সেই সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন।

Advertisement

জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী মানছেন, “এসডিও, বিডিও, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেও এ বার সবাইকে বায়োমেট্রিক মেশিনে নিজেদের উপস্থিতি জানাতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অফিসগুলোয় সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা জানানো হয়েছে।” জেলা প্রশাসনের একাংশ আধিকারিক জানাচ্ছেন, কয়েকটি জেলায় কিছু বিডিও অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু রয়েছে। তবে একেবারে জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এমন হাজিরা চালুর উদ্যোগ এই প্রথম। জেলা প্রশাসনের ওই সূত্রে খবর, আগামী ১ নভেম্বর থেকে সব এসডিও এবং বিডিও অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সব গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এই পদ্ধতিতে হাজিরা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শালবনির বিডিও সঞ্জয় মালাকার বলেন, “জেলার নির্দেশ পেয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সমস্ত অফিসে মেশিন বসে যাবে। মেশিনেই হাজিরা দেবেন কর্মীরা।” কেশপুরের বিডিও দীপককুমার ঘোষের কথায়, “জেলার নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক রয়েছে। ২১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস রয়েছে। অন্যদিকে, জেলায় মহকুমা ৩টি। মেদিনীপুর (সদর), খড়্গপুর এবং ঘাটাল। মেদিনীপুর কালেক্টরেট চত্বরেই মেদিনীপুর (সদর) মহকুমা অফিস রয়েছে। যেদিন থেকে কালেক্টরেটে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়েছে, সেদিন থেকে এখানেও ওই পদ্ধতিতে হাজিরা চালু হয়েছে। মহকুমাশাসক (সদর) দীননারায়ণ ঘোষ মানছেন, “বায়োমেট্রিক চালুর পরে হাজিরা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।” জেলা প্রশাসনের একাংশ আধিকারিক জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতি চালুর ফলে অনিয়মিত হাজিরায় রাশ টানা গিয়েছে। একাংশ কর্মী নির্ধারিত সময়ের পরে অফিসে আসতেন। নির্ধারিত সময়ের আগে অফিস থেকে চলে যেতেন। তাঁরা এখন নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, এরফলে ফাঁকিবাজিও রোখা গিয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, কর্মীদের হাজিরা নিয়মিত করা গেলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই অফিসগুলোয় কর্মসংস্কৃতি ফিরবে। প্রশাসনিক কাজেও গতি আসবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “কাজের প্রতি সকলেরই আরও সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। নির্দেশ দিয়ে এটা অনেক সময় বোঝানো সম্ভব হয় না। আশা করি, বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হলে ব্লকস্তরে আর ওই সমস্যা থাকবে না।”

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগও ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করছেন কর্মীরা। তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক অনুপ মান্না বলেন, “প্রশাসনের এই উদ্যোগ সত্যিই ভাল। বায়োমেট্রিক চালুর ফলে কালেক্টরেটে কর্মসংস্কৃতি ফিরেছে। নিশ্চিত ভাবে এ বার বিডিও অফিসগুলোয় কর্মসংস্কৃতি ফিরবে।” তাঁর কথায়, “এই পদ্ধতিতে হাজিরা চালু হলে কারচুপির জায়গা থাকে না। ফাঁকিবাজিরও জায়গা থাকে না।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “কর্মীদের দায়িত্ববোধ বাড়াতেই ব্লকস্তরে এই পদ্ধতিতে হাজিরা চালু করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন