মরা কাক। ১১ হাজার ভোল্টের হাইটেনশন তারে নতুন সংযোগের ফলেই এই বিপত্তি ঘটছে।
বিপদ জানা নেই। নেহাতই দোল খাওয়ার আনন্দে ওরা গিয়ে তাই বসছে বিদ্যুতের তারে। আর তাতেই ঘটছে মৃত্যু। বিদ্যুতের তারে বসে প্রতিদিনই বেশ কিছু কাক, শালিখ, সাতভায়া (ছাতারে)-র মতো বহু পাখি মারা যাচ্ছে জেলার নানা প্রান্তে। সম্প্রতি কেশিয়াড়ি বাজার এলাকায় এই ধরনের পাখির মৃত্যু বেড়েছে বলেই স্থানীয়দের দাবি।
এলাকাবাসী জানালেন, ১১ হাজার ভোল্টের হাইটেনশন তারে নতুন সংযোগের ফলেই এই বিপত্তি ঘটছে। একটি তার থেকে অন্য তারের দূরত্ব। ফলে, সমস্যা বেড়েছে। এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন পাখিপ্রেমী ও পরিবেশ কর্মীরা। সমস্যা সমাধানে আবেদন কেশিয়াড়ি বিদ্যুৎ দফতরে আবেদনও জানানো হয়েছে।
কেশিয়াড়ি থেকে বেলদা-কেশিয়াড়ি মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। রাস্তার ধারে থাকা সব বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে নতুন করে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। জায়গায় জায়গায় বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে তারের জটলা। কেশিয়াড়ি বাজার এলাকায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে রয়েছে দু’টি ট্রান্সফর্মার। অভিযোগ, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগের কোনও সমস্যার জেরেই পাখিগুলি বিদ্যুৎপৃষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যুতের এই তারেই ঘটছে বিপদ।
কেশিয়াড়ি বাজারে বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফরমারের পাশেই প্রতিদিন ফলের পসরা নিয়ে বসেন দোকানি শ্রীমন্ত গিরি। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় রোজই সকালে এসে দেখি পাখি মরে পড়ে আছে। খারাপ লাগে। বিদ্যুতের তারের কোনও সমস্যা থেকেই এমন হয়তো হচ্ছে।’’ নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আগেও কি পাখি মৃত্যুর ঘটনা ঘটত? স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ বেরার জবাব, ‘‘কয়েকদিন ধরে দেখছি পাখির মৃত্যুর মাত্রা বাড়ছে। এ ভাবে দিনের পর দিন পাখি মরতে থাকলে তো সমস্যা।’’ এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন কেশিয়াড়ির বাসিন্দা মলয়কুমার দাস। তিনি বলেন, ‘‘একমাত্র বিদ্যুৎ দফতরের সহযোগিতাতেই পাখিগুলি রক্ষা পেতে পারে।’’
প্রশাসন অবশ্য বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কেশিয়াড়ি বন বিভাগের বিট অফিসার অমিতেশ শতপথী বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। বিদ্যুৎ বিভাগকে তো সংযোগ দিতেই হবে। তবে দফতর থেকে নির্দেশ এলে বিষয়টি দেখা হবে।’’ কেশিয়াড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের স্টেশন ম্যানেজার নজবুল হোদারও বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে সেভাবে কিছু করার নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’