এই কেক ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ ঘুরলেই বড়দিন। সুস্বাদু কেকের পসরায় সেজে উঠছে দোকান। কিন্তু সেই কেক নিয়েও হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ‘বিতর্ক’। অভিযোগ, একটি বেসরকারি সংস্থার কেকে ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো।
স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকার দোকানে ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো দেওয়া ওই কেক দেখা গিয়েছে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই কেক যে কাগজের প্যাকেট বিক্রি করা হচ্ছে, তার উপরে ‘বিশ্ব বাংলা’ লেখা এবং বিশ্ব বাংলার একটি লোগো রয়েছে। সরকারি লোগো এ ভাবে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অনেক ক্রেতা আবার বিভ্রান্ত হচ্ছেন এই ভেবে যে, ওই কেক বুঝি সরকারি সংস্থার তৈরি। উল্লেখ্য, এই লোগো নিয়ে হাইকোর্ট মামলাও হয়েছিল। সে সময় একাধিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণ হয় যে, লোগোটি রাজ্য সরকারের। তা ব্যবহার করতে গেলে সরকারি অনুমোদন লাগে।
যে কেক ঘিরে এই বিতর্ক, সেটি নন্দীগ্রামের একটি সংস্থা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালেও ওই সংস্থা বিশ্ব বাংলা লেখা এবং তার লোগো দেওয়া কেক বিক্রি করেছিল জেলা জুড়ে। এ বছর এখনও পর্যন্ত ২০ হাজার প্যাকেট কেক তারা বাজারে জোগান দিয়েছে বলে সংস্থা সূত্রের খবর।
হলদিয়ার বাসুদেবপুরের এক বাসিন্দা শুভদীপ পতি বলেন, ‘‘দোকানে বিশ্ব বাংলা লেখা কেক দেখে ভেবেছিলাম রাজ্য সরকার হয়ত কেক বিক্রি করছে। তাই কিনতে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি এটা একটা ব্যক্তিগত বেকারি সংস্থার বানানো কেক।’’ বেসরকারি ভাবে লোগো ব্যবহার করে কেক বিক্রি করা যায় কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভদীপ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনের বিষয়টি দেখা উচিত।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চৈতন্যপুরের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘একটি বেকারি সংস্থা ওই কেক দিয়ে গিয়েছে। গ্রাহকেরা কিছু কিছু কেক নিয়ে যাচ্ছেন।’’ যদিও বিশ্ব বাংলার নাম আর লোগো ব্যবহার নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হন ওই ব্যবসায়ী।
বেসরকারি ভাবে রাজ্য সরকারের লোগো ব্যবহার করা হচ্ছে কেন? এ ব্যাপারে ওই কেক সংস্থার এক আধিকারিক শিবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘মানুষের চাহিদা মেনেই বিশ্ব বাংলার নাম এবং লোগো ব্যবহার করে কেকের প্যাকেট বানিয়েছি।’’
কেকে সরকারি লোগো ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়েছিল জেলাশাসক রশ্মি কমল-সহ একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে। কিন্তু তাঁরা কেউই ফোন ধরেননি। তবে কেক বিতর্কে সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার বলেন, ‘‘ওই কেকের প্যাকেটের নমুনা সংগ্রহ করে দেখছি। তারপর প্রশাসনিকভাবে যা যা করণীয়, তা করা হবে।’’ আর হলদিয়ার মহকুমাশাসক কুহক ভূষণ বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’