Suvendu Adhikari

হাজরায় মমতার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইব, ছেড়ে দেব রাজনীতি করা, কেন বললেন শুভেন্দু

গত সোমবার তাঁর নাম উল্লেখ না করে যে যে অভিযোগ (এবং আক্রমণ) করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, এই সোমবার একে একে তার জবাব দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাতে এসে পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খেজুরি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২০
Share:

সোমবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ‘জবাবি’ সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতিতে ধারাবাহিক ভাবে তৃণমূল সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রত্যুত্তরে শুভেন্দুর দিকেও আঙুল তুলেছেন মমতা। গত সোমবার খেজুরিতে প্রশাসনিক বৈঠকে এ নিয়ে তোপ দাগেন তিনি। সোমবার মমতার সভার ‘জবাবি’ সভা থেকে তাঁকে খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। জানালেন, চাকরি সংক্রান্ত একটি দুর্নীতিতেও তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতির ময়দান ছেড়ে দেবেন। প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মাফও চাইবেন।

Advertisement

গত সোমবার তাঁর নাম উল্লেখ না করে যে যে অভিযোগ (এবং আক্রমণ) করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, এই সোমবার একে একে তার জবাব দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাতে এসে পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গও। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘উনি এই জেলা (পূর্ব মেদিনীপুর), পুরুলিয়ায় ইত্যাদিতে নিয়োগ নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘একটা নাম দেখান মুখ্যমন্ত্রী! আমি বিরোধী দলনেতা বলছি, রাজনীতি ছেড়ে দেব। আপনার বাড়ির সামনে, হাজরা মোড়ে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইব। কিন্তু পারবেন না আপনি।’’

উল্লেখ্য, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তের আবহে পুরুলিয়ায় চাকরির কোটা নিয়ে ‘কেলেঙ্কারি’র অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগে মালদহে প্রশাসনিক সভা থেকেও মমতা অভিযোগ করেন, পুরুলিয়ার যুবকদের চাকরির কোটা ‘কেউ’ পকেটে ঢুকিয়েছেন। মমতা আরও বলেছিলেন, ‘‘কয়েকটা ডাকাত-গদ্দার আমার দল থেকে বিদায় নিয়েছে। ওরাই এই কাজ করেছিল।’’ তার পরে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভাতেও একই অভিযোগ করেন মমতা। ‘কেউ’ বলতে মমতা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকেই ইঙ্গিত করছেন বলে মনে করা হচ্ছিল। বস্তুত, শুভেন্দু নিজেও তেমনই মনে করেন।

Advertisement

খেজুরির যে জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন, সেখানেই এক সপ্তাহ পর ‘তিনগুণ বেশি’ লোক নিয়ে সভা করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন শুভেন্দু। শুধু নন্দীগ্রাম নয়, পাশের বিধানসভা খেজুরিতেও যে তাঁর প্রভাব শাসকদলের চেয়ে বেশি, সেই দাবি করে শুভেন্দু বলেন, “আজকের সভা ২৫ হাজার স্কোয়ার ফিটের সভা। ওঁর (মমতা) ছিল ১৬ হাজারের। তাঁরা (সভায় উপস্থিত লোকজন) আবার নন-ভোটার। কিন্তু আমার সভায় ৯৯ ভাগই ভোটার।’’ শুভেন্দুর দাবি, প্রান্তিক মানুষের উপর জোর খাটিয়ে বা খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে সভায় লোক ভরাতে হয় শাসকদলকে। কিন্তু তাঁকে তা করতে হয় না। কারণ, তাঁর জনভিত্তি অনেক বেশি। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘এখানে ‘ফুড প্যাকেট’ তো দূরের কথা, জলের বোতলও দিতে পারিনি! জলের পাউচ আছে। ৪০ পয়সা দাম সেগুলোর।’’ এর পর হাতজোড় করে জনতাকে নমস্কার জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তা-ও আপনারা এসেছেন।”

পাশাপাশি, নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতার কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রীর কী ভূমিকা ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘২০২১ সালের ভোটে তো উত্তর পেয়েছেন! নন্দীগ্রামের ১৭টা অঞ্চলের মধ্যে যদি দুটো অঞ্চলের নাম বলে দিতে পারেন, যদি আন্দোলনের সময় যে ৪১ জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যে কোনও তিন শহিদের নাম বলে দিতে পারেন, তা হলে বুঝব, আপনি নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ছিলেন।’’ শুভেন্দুর সংযোজন, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় আপনি কোথায় ছিলেন হরিদাস পাল? আসলে সিঙ্গুর ছিল আপনার পেটের ছেলে। আর নন্দীগ্রাম পিঠের। নন্দীগ্রাম আন্দোলন তো আপনি স্বীকারই করেননি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন