উচ্ছ্বাস: মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বোর্ড গঠনের পর। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ঝাড়গ্রাম জেলায় নব্বই শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁরাই বোর্ড গঠন করবেন। জেলায় মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৭৯টি। তার মধ্যে সোমবার ৩২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন হয়। এ দিন অবশ্য ২০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচনে শাসকদলের সঙ্গে টক্কর দিতে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে সিপিএম ও সিপিআইয়ের সমর্থনে নিয়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে বিজেপির সমর্থনে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে সিপিএম। কয়েকটি ক্ষেত্রে আবার তৃণমূলের সরকারি প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাদের দলেরই অন্য গোষ্ঠীর প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে শাসকদলের হিসেব উল্টে দেওয়ার দাবি করছে গেরুয়া শিবির। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, “এরা সবাই আমাদের দলে আসতে চেয়েছিল। বিজেপিই ওদের আটকে রেখেছিল। তবে এগুলো সাময়িক।”
জেলার ৭৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ৪১টিতে তৃণমূল, ২৪টিতে বিজেপি, তিনটিতে নির্দলরা এগিয়েছিল। ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত অমীমাংসিত অথবা ত্রিশঙ্কু ছিল। ত্রিশঙ্কু সাতমায় বিজেপির সমর্থনে বোর্ড দখল করেছে সিপিএম। আর ত্রিশঙ্কু আলমপুরে বিজেপির সমর্থনে তৃণমূলের মনোনীত অফিসিয়াল প্রার্থীর বিরুদ্ধে শাসক দলের অন্য এক প্রার্থী প্রধান নির্বাচিত হন। ইতিপূর্বে বিনপুর ১ ব্লকের আঁধারিয়া, সাঁকরাইলের রোহিণী এবং এ দিন জামবনির চিচিড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির সমর্থনে তৃণমূলের বোর্ড হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘তৃণমূলের অফিসিয়াল টিমকে আমরা সমর্থন করিনি।’’মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে একমাত্র নির্বাচিত সিপিএম সদস্য মহাশিস মাহাতোর সমর্থনে বিজেপির প্রধান কল্যাণী মুদি নির্বাচিত হন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহাশিস উপপ্রধান নির্বাচিত হন। মহাশিসের দাবি, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার লক্ষে জনগণের দাবিতেই বিজেপির প্রধানকে সমর্থন করেছি।’’
একই ভাবে বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সিপিআই সদস্য মনা হাঁসদার সমর্থনে বিজেপি-র প্রধান পদে প্রদীপ ডিহিদার নির্বাচিত হন। বাঁধগোড়ায় ১৬ টি আসনের ৮টিতে বিজেপি, সিপিআই ১টি এবং ৭টি আসন তৃণমূল পেয়েছিল। সমর্থনের পুরস্কার হিসেবে মনা উপপ্রধান নির্বাচিত হন।
গোপীবল্লভপুর-২’এর নোটা ও কুলিয়ানা, সাঁকরাইলের ছত্রি, পাথরা ও খুদমরাই পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রধান নির্বাচিত হয়েছে। বিনপুর-১’এর বিনপুর, বেলাটিকরি, সিজুয়া, রামগড়, বিনপুর-২’এর হাড়দা, জামবনির জামবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ডও বিজেপির দখলে এসেছে। নয়াগ্রামের বালিগেড়িয়া ও আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টির বোর্ডও বিজেপি দখল করেছে। ঝাড়গ্রাম ব্লকের লোধাশুলি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রধান নির্বাচিত হন।
এ দিন দিলীপবাবু গোপীবল্লভপুরের বিভিন্ন প্রান্ত চষে বেড়ান। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।