বিজেপি, তৃণমূলের গোলমালে ছররা গুলি

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাড়দা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০০:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিজেপি-তৃণমূলের গোলমালে উত্তপ্ত হল বিনপুরের হাড়দা। উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর দাবি করেছে। উঠেছে গুলি চালানোর অভিযোগও। উভয়পক্ষেরই দাবি, গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় স্থানীয় বিজেপি ও তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী নেতা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। ঘটনার পরেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হাড়দা অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সিন্টু সাহা। এক বিজেপি কর্মীও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

বিজেপি-র বিনপুর মণ্ডল পর্যবেক্ষক রাজেশ মণ্ডলের দাবি, এ দিন সকালে বাজার করার সময় তিনটি মোটরবাইকে করে এসে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর উপর চড়াও হন। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের হাড়দা অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহা।

রাজশেখরবাবুর দাবি, এক বিজেপি কর্মী তাঁকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ায় অল্পের জন্য তিনি প্রাণে রক্ষা পান। তবে ছররা গুলির খোল ছিটকে লাগে দীপক সিংহ নামে এক বিজেপি কর্মীর চোখের নিচে। দীপকবাবুর বাম পাঁজরেও আঘাত লেগেছে। দীপকবাবুকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

অন্য দিকে, এদিন ঘটনার পরে ‘অসুস্থ’ হয়ে সিন্টুবাবু ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সিন্টুবাবুর পাল্টা অভিযোগ, এ দিন তিনি হাড়দা বাজারে আনাজ কিনতে গিয়েছিলেন। ওই সময় রাজেশবাবুই দলবল নিয়ে তাঁর উপর গুলির হামলা চালান। অল্পের জন্য সিন্টুবাবু প্রাণে বেঁচে যান। সিন্টুবাবুর দাবি, “রাজেশের লাঠির আঘাতে ও ছুটে পালানোর সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছি।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”

হাড়দা অঞ্চলে রাজেশবাবু ও সিন্টুবাবুর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই চলছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজেশবাবু আগে তৃণমূল করতেন। তৃণমূলের হাড়দা অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহার সঙ্গে বিরোধের জেরে রাজেশবাবু বছর চারেক আগে বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি এখন বিজেপি-র বিনপুর মণ্ডলের পর্যবেক্ষক।

তাঁর স্ত্রী হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ঝুমা মণ্ডলও সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রাজেশবাবুর অভিযোগ, “উন্নয়নের নামে সিন্টুবাবুর নেতৃত্বে হাড়দা পঞ্চায়েতের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনিক মহলে অভিযোগ জানিয়েছি। সেই আক্রোশেই আমার উপর হামলা চালানো হয়েছে।” অন্য দিকে, সিন্টুবাবুর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে রাজেশ এ সব করছে।”

প্রসঙ্গত, এর আগেও গত পাঁচ বছরে একাধিকবার সিন্টুবাবুর উপর গুলির হামলা চলেছিল বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি তোলা হয়েছিল। প্রতিবার রাজেশবাবুর বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন সিন্টুবাবু। কয়েক বছর আগে রাজেশবাবু গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন জেলেও ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন