কোথাও মেলেনি ‘সহজ পাঠ’। কোথাও আবার হাতে আসেনি ‘আমাদের পরিবেশ’। কোথাও পাওয়া যায়নি চতুর্থ শ্রেণির ‘ইংরেজি’ বই।— মঙ্গলবার এমনই নানা অভিযোগ তৈরি হল বই দিবসকে কেন্দ্র করে।
শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন পড়ুয়াদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দিতে বই দিবস পালিত হয়েছে সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সে জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হলেও চাহিদা মতো সমস্ত বই সরবরাহ হয়নি। ফলে মঙ্গলবার বহু পড়ুয়ার হাতেই সব বই তুলে দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রাথমিক শিক্ষকেরা। তবে এই অভিযোগ কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস দাস। তিনি বলেন, “জেলায় এ বছরের পড়ুয়াদের পাঠ্যবই দেওয়ার জন্য গত বছরের পড়ুয়া সংখ্যার ভিত্তিতে চাহিদা জানানো হয়। এ বার পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে হয়তো পড়ুয়াদের হাতে সব পাঠ্যবই তুলে দেওয়া যায়নি। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের সব বই দেওয়া হবে।”
সংসদ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, স্কুলপড়ুয়াদের পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার ছবি জমা দিতে হয় এসআই (স্কুল পরিদর্শক) অফিসে। পড়ুয়াদের বই দিতে ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে পড়ুয়া সংখ্যার ভিত্তিতে এসআই অফিস থেকে প্রধান শিক্ষকদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়। চলতি বছরেও একই পদ্ধতিতে বই দিবস পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ডিসেম্বর মাসে এসআই অফিসে বই আনতে গিয়ে সব বই মেলেনি। ফলে শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিনে বই দিবস পালন করা হলেও সব পড়ুয়ার হাতে সব বই তুলে দেওয়া যায়নি। এ নিয়ে পড়ুয়াদের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
কোলাঘাট ১ নম্বর চক্রের পদমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেঘনাথ খামরুই বলেন, “স্কুলে বই দিবস পালন করা হলেও এ দিন প্রথম শ্রেণির ২৮ জন পড়ুয়ার হাতে ‘সহজ পাঠ’ বই তুলে দেওয়া যায়নি। ওদের দেওয়া হয়েছে ‘আমার বই’ এবং ‘স্বাস্থ্য বিধান’। ‘সহজ পাঠ’ পরে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছি।” তমলুক ব্লকের শ্রীরামপুর চক্রের মির্জাপুর আত্যয়িক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র পট্টনায়ক বলেন, “প্রথম শ্রেণির ২৮ জন পড়ুয়ার হাতে ‘সহজ পাঠ’ এবং চতুর্থ শ্রেণির ৩০ জন পড়ুয়ার হাতে ‘ইংরেজি’ ও ‘আমার পরিবেশ’ দেওয়া যায়নি। এ নিয়ে পড়ুয়াদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বর্তমানে ৩২৬৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৬ সালে এই সব স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির মোট পড়ুয়া ছিল ২ লক্ষ ৫৯ হাজার। ২০১৭ সালে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল ২ লক্ষ ৭৫ হাজার। সভাপতি মানসবাবুর মতে, পড়ুয়া সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই এ দিন সকলের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া যায়নি।