সাবালক খড়্গপুর বইমেলা, উদ্বোধনেই উৎসবের মেজাজ

স্মরণিকা প্রকাশ, সম্মেলক আবৃত্তি, নৃত্যানুষ্ঠানের পাশাপাশি সাহিত্যিক অনিল ঘোড়াই স্মৃতি পুরস্কার প্রদান হয়েছে এ দিন। ৬৫টি স্টলে সাজানো এই মেলা চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:১০
Share:

সূচনা: বইমেলার উদ্বোধন করছেন সাহিত্যিক বাণী বসু। রয়েছেন অধ্যাপক দিলীপ শূর, মেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চৌধুরী । শনিবার খড়্গপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

আঠারোয় পা দিল খড়্গপুর বইমেলা। শহরের বিদ্যাসাগর আবাসন প্রাঙ্গণে রকমারি আয়োজনে শনিবার উদ্বোধন হয়েছে অষ্টাদশতম খড়্গপুর বইমেলার। মেলার উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক বাণী বসু। উপস্থিত ছিলেন লন্ডন প্রবাসী অধ্যাপক দিলীপ শূর, অধ্যাপক তপনকুমার পাল, কবি সুনীল মাজি, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। প্রথম দিনেই জমজমাট ছিল মেলা চত্বর। স্মরণিকা প্রকাশ, সম্মেলক আবৃত্তি, নৃত্যানুষ্ঠানের পাশাপাশি সাহিত্যিক অনিল ঘোড়াই স্মৃতি পুরস্কার প্রদান হয়েছে এ দিন। ৬৫টি স্টলে সাজানো এই মেলা চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। রোজই থাকবে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ দিন বাণী বসুও বলেন, “এই বইমেলার আঠারো বছর বয়স। এটা শুভ লক্ষণ। বইমেলা প্রাঙ্গণ দেখে মনে হচ্ছে এটা মেলা নয়, উৎসব প্রাঙ্গণ।” জেলার শহরগুলিতে বইমেলা আয়োজনের প্রশংসার পাশাপাশি বাণীদেবী মনে করিয়ে দেন, “এখনকার ছেলেমেয়েরা খুব অধৈর্য। ওরা কঠিন জিনিস বাদ দিয়ে বড় হচ্ছে। এমন মানসিকতায় বদল আনতে বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমরা বইমেলা বা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা করছি। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা যেন বইয়ের গুরুত্ব ভুলে না যাই।”

Advertisement

২০০০ সালে মাত্র ১৮টি স্টল নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল খড়্গপুর বইমেলা। ক্রমে মেলার পরিসর বে়ড়েছে, গুণিজনের সান্নিধ্যে উজ্জ্বল হয়েছে মেলা। সুচিত্রা ভট্টাচার্য, মহাশ্বেতা দেবী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, হর্ষ দত্তের মতো কবি-সাহিত্যিক থেকে নচিকেতা চক্রবর্তী, অনুপম রায়, মমতা শঙ্কর, আকৃতি কক্করের, অভিজিৎ, রূপম ইসলামের মতো সংস্কৃতি জগতের ব্যক্তিত্বও মেলার মঞ্চে হাজির হয়েছেন। এ বারও মেলায় রয়েছে নানা অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী মঞ্চে বইমেলার স্মরণিকা প্রকাশের পরে এ বারই প্রথম অনিল ঘোড়াই স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয় শহরের প্রবীণ সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায়চৌধুরীকে। সাবালক বইমেলার দিন এ বার ৯ থেকে বেড়ে ১০ হয়েছে। রোজই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গল্পপাঠ, কবিতাপাঠ, হিন্দি কবি সম্মেলনের আসর। একদিন যাবতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন শহরের মহিলারা। আর মেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আকর্ষণ মুম্বইয়ের শিল্পী অলকা যাজ্ঞিকের সঙ্গীতানুষ্ঠান।

মেলা চালু হতেই বইপ্রেমীদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। ‘আনন্দ’, ‘ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট’ (এনবিটি), ‘দে’জ’, ‘পুনশ্চ’র স্টলে ভালই ভিড় ছিল। ‘আনন্দ’র স্টলের দায়িত্বে থাকা শোভন দাস বলেন, “প্রতিবছর এই বইমেলায় আমাদের স্টলে ভাল ভিড় হয়। ঘন্টা খানেক স্টল খুলেছি। তার মধ্যেই আটজন বই কিনেছেন।” অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রাজকাহিনী’ কিনে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী মালঞ্চর যুবতী রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সত্যি বলতে বাইরের মানুষের কাছে খড়্গপুর মানেই অপরাধের শহর। কিন্তু এই শহরে যে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চার ধারাও রয়েছে, এই বইমেলা তা প্রমাণ করে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন