Kurmi Community

তৃণমূলের বুথ সভাপতি দল ছাড়লেন গোয়ালতোড়েও

গোয়ালতোড়ের পাথরপাড়া অঞ্চলে কুড়মি সম্প্রদায়ের বহু পরিবারের বাস। তাঁদের বহু দিনের দাবি, তফসিলি জনজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৩ ০৮:০৪
Share:

সোমবার গোয়ালতোড়ে কুড়মি সমাজের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র rupsankar.2011@gmail.com

গোয়ালতোড়: কুড়মিদের তফসিলি জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবিতে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের এক বুথ সভাপতি। গোয়ালতোড়ের পাথরপাড়া পঞ্চায়েতের সিংলা উত্তর বুথের তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত মাহাতো রবিবার বিকেলে এক ভিডিয়ো বার্তায় (আনন্দবাজার যার সত্যতা যাচাই করেনি) এই ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গোয়ালতোড়ের পাথরপাড়া অঞ্চলে কুড়মি সম্প্রদায়ের বহু পরিবারের বাস। তাঁদের বহু দিনের দাবি, তফসিলি জনজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এই দাবিতে কুড়মি সমাজের আন্দোলনে পাথরপাড়া অঞ্চলের কুড়মি সম্প্রদায়ের অনেকেই সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। রবিবার থেকে এক সপ্তাহ জুড়ে বাড়িতে বাড়িতে কুড়মিদের হলুদ পতাকা বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে। পাথরপাড়ার শিংলা এলাকাতেও চলছে ‘জয় গরাম’ লেখা হলুদ পতাকা বাঁধার কাজ।

জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে সেই পতাকা বাঁধার কাজের সময়ই শিংলা উত্তর বুথের তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত মাহাতো দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, একটি কাগজ দেখে পড়ে তিনি বলছেন - 'কুড়মি সমাজের দাবি না মানার জন্য সিংলা বুথ সভাপতি তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিলাম সুব্রত মাহাতো।' এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে এলাকায়। সোমবার সকালে ফোনে সুব্রত মাহাতো বলেন, "আগে জাতি, তারপর দল। এখন জাতির আন্দোলন চলছে। তাই দল থেকে আমি নিজের থেকেই ইস্তফা দিয়েছি। দলের কাছে না হলেও, আমি ভিডিয়োয় ঘোষণা করে দিয়েছি।" কিছুদিন আগে এই সিংলা উত্তর বুথেই যুব তৃণমূলের সভাপতি অমলেন্দু মাহাতো ফেসবুক পোস্ট করে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এদিন ফোনে অমলেন্দু বলেন, "কুড়মি সমাজের দাবি না মানার জন্য আমিও বুথের যুব সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেছিলাম।"

Advertisement

কুড়মি সমাজের আন্দোলনের জেরে এই ইস্তফায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। পাথরপাড়া অঞ্চলের তৃণমূলের যুব সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, "সিংলা বুথের যুব সভাপতির পদত্যাগের বিষয়টি মোবাইলে ঘোরাঘুরি করছে, দলের কাছে পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি। উনি দলেই আছেন।" এই অঞ্চলের তৃণমূলের নেতা বিশ্বেস দাস বলেন, "সিংলা উত্তর বুথের তৃণমূলের সভাপতির ইস্তফা দেওয়ার যে ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে আছে তার গুরুত্ব নেই। উনি প্রচারের জন্য এটা করেছেন। দলকে কিছু জানাননি।" দলীয় পদ থেকে বুথ সভাপতির ইস্তফার প্রসঙ্গে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "এরকম হয়ে থাকলে বিষয়টি আলোচনা করে দেখব। আবার বলছি কুড়মি সম্প্রদায়ের সমস্ত দাবিদাওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে দেখেছেন, আলোচনা করেছেন। তাঁদের যে দাবি সম্বলিত রিপোর্ট ইতিমধ্যে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছেন। পুরোটা রাজ্য সরকারের হাতে নেই। ওঁরাও জানেন এটা কেন্দ্রের হাতে।" দলের বুথ সভাপতির ইস্তফার প্রসঙ্গে সুজয় হাজরা বলেন, "স্বাধীন ভারতবর্ষে কে কোন দল করবে, কী খাবে - এসব সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে দেওয়া হয়েছে। যে মনে করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের সঙ্গে থাকবে, তো থাকবেন। এসব সাধারণ মানুষের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত।"

এ দিন দুপুরে গোয়ালতোড়ের সিদো কানহো মোড়ে কুড়মিদের অসম্মান করার জন্য তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতির কুশপুতুল আগুনে পুড়িয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করা হয় বলে জানান কুড়মি সমাজের নেতা আশিস মাহাতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন