পড়ে নতুন বাসস্ট্যান্ড, বাস দাঁড়াচ্ছে রাস্তাতেই

নবনির্মিত বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন হয়েছে দেড় বছর আগে। তবে যানজট থেকে মুক্তি পায়নি কেশিয়াড়ি। খড়িকা, মেদিনীপুর, দিঘা, সোনাকানিয়া, বালিগেড়িয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ বেশ কিছু রুটের প্রায় ৭৫টি বাস কেশিয়াড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

উদ্বোধনের পরেও চালু হয়নি কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ড। — নিজস্ব চিত্র।

নবনির্মিত বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন হয়েছে দেড় বছর আগে। তবে যানজট থেকে মুক্তি পায়নি কেশিয়াড়ি।

Advertisement

খড়িকা, মেদিনীপুর, দিঘা, সোনাকানিয়া, বালিগেড়িয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ বেশ কিছু রুটের প্রায় ৭৫টি বাস কেশিয়াড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করে। বাসস্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তায় বাস দাঁড় করিয়েই চলত যাত্রী ওঠানো-নামানো। যানজটও হত নিত্যদিন। নাকাল হতেন নিত্যযাত্রীরা।

যানজট কমাতে ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে তৎকালীন বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি বাসস্ট্যান্ড গড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কেশিয়াড়ি-বেলদা রাস্তার ধারে কদমকুড়িতে প্রায় দেড় একর খাস জমিতে বাসস্ট্যান্ড গড়ার পরিকল্পনা হয়। বরাদ্দ হয় ২৫ লক্ষ টাকা। ২০১০ সাল থেকে শুরু হয় কাজ। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ওই বাসস্ট্যান্ডের কাজ গতি হারায়।

Advertisement

২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বাসস্ট্যান্ড চালু করতে উদ্যোগী হন বিডিও। তারপর এগোয় নির্মাণ কাজ। বছর দেড়েক আগে নতুন স্ট্যান্ডের উদ্বোধনও হয়। কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অশোক রাউত বলেন, “বাসস্ট্যান্ডে সব রকমের পরিকাঠামো রয়েছে। বাস মালিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে একটা সমস্যা হয়েছে। ওঁরা বাস নিয়ে স্ট্যান্ডে যেতে চাইছে না।”

সমস্যা কোথায়? বেলদা-কেশিয়াড়ি রাস্তার কেশিয়াড়ি মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ড প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। স্ট্যান্ডে যেতে-আসতে বাসগুলিকে অতিরিক্ত দু’কিলোমিটার পথ পেরোতে হবে। বাস মালিকদের অভিযোগ, কেশিয়াড়ি মোড়েই অধিকাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকে। স্ট্যান্ডে যেতে হলে অতিরিক্ত পথ পেরোতে হবে। ফলে সময়, জ্বালানি দুই-ই নষ্ট হবে। হারাতে হবে যাত্রীও। এ ছাড়াও স্ট্যান্ডে গেলে যাত্রী পাওয়াও সমস্যার।

কেশিয়াড়ি বাস অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি গজেন দাস বলেন, “ওই স্ট্যান্ডে বাস নিয়ে গেলে প্রতিবার যে অতিরিক্ত দু’কিলোমিটার পথ যেতে হবে সেই খরচ কে দেবে? আর ওই এলাকায় গেলে যাত্রীও পাব না। তাই ওই স্ট্যান্ডে বাস নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান করলে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব।’’ নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে খড়্গপুরে যাওয়ার জন্য বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করার দাবিও জানাচ্ছেন বাস মালিকরা।

স্ট্যান্ডে কেউ যেতে না চাওয়ায় কেশিয়াড়ি মোড়ে যানজটের ছবি বদলায়নি। স্থানীয় ব্যবসায়ী আশিসকুমার মিশ্র বলেন, “এ ভাবে রাস্তায় বাস দাঁড়িয়ে থাকায় বাজারে সাধারণ মানুষের চলার জায়গা থাকছে না। দিনের ব্যস্ত সময়ে যানজট হচ্ছে। আমরা চাই, অবিলম্বে বাসস্ট্যান্ড করা হোক। প্রশাসনের উদ্যোগী হওয়া উচিত।’’

এ বিষয়ে বিডিও গৌতম সান্যাল বলেন, “বহুবার চেষ্টা করলেও বাস মালিকেরা ওই স্ট্যান্ডে বাস নিয়ে যেতে চাইছেন না। আমাদের এর বেশি আর কী করার রয়েছে। আমি বিষটি ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানিয়েছি।” স্ট্যান্ড চালু করার বিষয়ে ফের ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অশোকবাবু বলেন, “বাসস্ট্যান্ড চালু করার জন্য আলোচনা চলছে। বাস মালিকদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করব। আশা ককি, কিছু একটা সমাধানের পথ বেরোবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন