ভাঙা: গোয়ালতোড় বাসস্ট্যান্ডের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র
স্ট্যান্ড আছে। যাত্রীদের শেড আছে। পানীয় জলের ব্যবস্থাও আছে। আছে শৌচাগারও। কিন্তু স্ট্যান্ডে শুধু বাসগুলো নেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় শহরের স্ট্যান্ডে বাস না ঢোকায় হয়রানির শিকার বাসযাত্রীরা।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাস স্ট্যান্ডটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বহু বার বহু জায়গায় আর্জি জানানো হয়েছে। তবে কাজ হয়নি। গোয়ালতোড় থেকে প্রতিদিন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর ও কলকাতা-সহ নানা রুটের ৭০-৮০টি বাস চলাচল করে। এখানে একাধিক স্কুল, কলেজ,ব্যাঙ্ক, ব্লক স্তরের সমস্ত অফিসও রয়েছে। ভোর থেকেই বাস ধরার জন্য গোয়ালতোড় শহরে বহু মানুষের ভিড়ও হয়। কিন্তু স্ট্যান্ডে বাস না ঢোকায় শহরের হুমগড় মোড়ে খোলা আকাশের নীচেই অপেক্ষা করতে হয়। কাছাকাছি নেই শৌচাগার ও পানীয় জলের সুবিধাও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলনের জেরে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি জেলা কৃষি বিপণন দফতর স্ট্যান্ডটি তৈরি করে দিয়েছিল। গোয়ালতোড় শহরে সংশ্লিষ্ট দফতরের নিজস্ব একটি বড় বাজার রয়েছে। এলাকাবাসীর স্বার্থেই বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও দফতরের নিজস্ব জমিতেই তৈরি হয়েছিল সুপার মার্কেটও। অল্প টাকায় স্থানীয় বেকার যুবকদের ওই কমপ্লেক্সের ঘর বিলি করা হয়েছিল। শুরুতেই স্থানীয় ও দুরপাল্লা রুটের সমস্ত বাসই স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ত। রাতে স্ট্যান্ডেই থাকত। বাসস্ট্যান্ডে লোকজনের আনাগোনায় দোকানগুলিও বেশ চালু হয়েছিল।
কিন্তু আচমকা স্ট্যান্ডে বাস ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, গোয়ালতোড়-হুমগড় সড়কের ধারেই স্ট্যান্ড। এক সময় সংস্কারের অভাবে রাস্তা থেকে পিচ উঠে গিয়েছিল।সেই সময় থেকেই দু’একটি বাস স্ট্যান্ডে না গিয়েই যে যার গন্তব্যে যেতে শুরু করে। ২০০৯ সালে মাওবাদী আতঙ্কে গোয়ালতোড় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফাঁকা পড়ে থাকে বাস স্ট্যান্ডটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই বিষয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল না থাকায় সন্ধ্যা হলেই বাস স্ট্যান্ডে মদ-জুয়া থেকে গাঁজার মতো নানা অসামাজিক কাযর্কলাপ চলে। স্ট্যান্ডে বাস না ঢোকায় সমস্যায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও। অজিত লোহার বলেন, “ব্যবসা মার খাচ্ছে। কিন্তু উপায় না থাকায় দোকান খুলেই বসে থাকি।”
এই সব সমস্যার কথা মেনে নিয়ে গোয়ালতোড়ের বিডিও স্বপন কুমার দেব বলেন, “দ্রুত বাস মালিকদের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠকে বসব।” সমস্যা মেটাতে আগ্রহী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতিও। তিনি বলেন, “আগে সমস্ত বাসই স্ট্যান্ডে যেত। যাতে ফের সমস্ত বাসই স্ট্যান্ডে ঢোকে সেই ব্যাপারে নির্দেশ সব বাস মালিককে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”