বিপণনের জন্যই মেলা, সওয়াল ক্ষুদ্রশিল্প মন্ত্রীর

লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে উত্সব-মেলা করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বিরোধীরা। শনিবার মেদিনীপুরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধনে এসে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য জানিয়ে দিলেন, মেলা-উত্সব হয় গরিব শিল্পীদের স্বার্থেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

মেদিনীপুর মাদুরের স্টলে। —নিজস্ব চিত্র

লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে উত্সব-মেলা করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বিরোধীরা। শনিবার মেদিনীপুরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধনে এসে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য জানিয়ে দিলেন, মেলা-উত্সব হয় গরিব শিল্পীদের স্বার্থেই। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা যখনই কোনও মেলা-উত্সব করি, কিছু লোক আছে যারা সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এই মেলাতে কী উপকার হচ্ছে? শিল্পীরা বাজার পাচ্ছেন, তাঁদের উত্পাদিত পণ্যের কেনাবেচা হচ্ছে। মেলার ফলে বিপণন হচ্ছে।’’

Advertisement

রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৮০০ জন শিল্পী এই মেলায় যোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন স্টলে রয়েছে এক-এক ধরনের হস্তশিল্প সামগ্রী। প্রথম দিন বিকেল থেকেই মেলায় ভিড় জমতে শুরু করেছে। মেদিনীপুর শহরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে হস্তশিল্প মেলা চলবে আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত। এর আগে ২০১১ সালে মেদিনীপুরে এমন রাজ্য হস্তশিল্প মেলা হয়েছিল। স্বপনবাবু জানান, চলতি আর্থিক বছরে রাজ্যের পাঁচ জায়গায় এই মেলা করার পরিকল্পনা ছিল। ইতিমধ্যে চার জায়গায় হয়ে গিয়েছে। শেষ মেলাটি শুরু হল মেদিনীপুরে। ২০১১ সালের মেলায় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার বিক্রি হয়েছিল। মন্ত্রীর আশা, এ বার মেলায় প্রায় ৫ কোটি টাকার বিক্রি হবে।

এ দিন সকালে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বপন দেবনাথের পাশাপাশি ছিলেন জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, “ক্ষুদ্র শিল্পে মানুষের কর্মসংস্থানে সব থেকে বেশি সুযোগ রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই এই শিল্পের প্রসারে উদ্যোগী হয়েছেন। ক’দিন আগে মেদিনীপুরে তাঁতবস্ত্র মেলা হয়েছে। সেখানে রেকর্ড বিক্রি হয়েছে।” তাঁর কথায়, “মাটির কাজ, সোলার কাজ, কাঠের কাজ, বেতের কাজ, পটচিত্রের কাজ গরিব মানুষেরাই করেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।’’ মন্ত্রী আরও জানান, জেলাতেও কর্মতীর্থ হচ্ছে। যেখানে সারা বছরই কেনাবেচা হবে।

Advertisement

স্বপনবাবু এ দিন জানান, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শিল্পীদের রঙিন পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেই ৭৫ হাজার শিল্পীকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে শিল্পীদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দিতে হচ্ছে কর্মশালা। বাংলার শিল্পীদের হাতের কাজ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বিশ্ববাংলা’ করেছেন। জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রও বলেন, “সমালোচকেরা সমালোচনা করবেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন না দেখলে তার বাস্তবায়ন হয় না।’’ সৌমেনবাবুর যুক্তি, ‘‘সরকার যদি না সাহায্য করে তাহলে শিল্পীরা উপকৃত হবেন কি করে? সমষ্টিগত মানুষের সমাবেশ দরকার। এটা মেলাতেই হয়। এতে দোষটা কোথায়?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন