ছিন্ন: মাটি খুঁড়তে গিয়ে ছিঁড়ে গিয়েছে তার। নিজস্ব চিত্র
নতুন নিকাশি নালা তৈরির জন্য রাস্তার ধারে মাটি খোঁড়া হচ্ছে ঝাড়গ্রাম শহরে। আর তার জেরে বিপর্যস্ত শহরের বিএসএনএল-এর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ল্যান্ডলাইন পরিষেবা। জেলাশাসকের কার্যালয়-সহ প্রশাসনিক দফতরগুলির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক কাজেও সমস্যা হচ্ছে। ইন্টারনেটের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়িক কাজও।
পুরসভার উদ্যোগে শহরে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল প্রকল্পের জন্য পাইন লাইন বসানোর কাজ চলছে। সেই সঙ্গে কোনও কোনও এলাকায় রাস্তার ধারে নতুন নালাও তৈরি হচ্ছে। এ জন্য রাস্তার ধারে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। টেলিফোন বিভাগের আধিকারিকদের অভিযোগ, পুরসভার ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীরা মাটি খুঁড়তে গিয়ে বেশিরভাগ জায়গায় বিএসএনএল-এর কেবল কেটে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পানীয় জলের পাইপ বসানোর পরে কাটা কেবলগুলি মাটির তলায় চাপা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শহরের আটশো ল্যান্ডলাইন ও কয়েকশো গ্রাহকের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
টেলিফোন বিভাগের আধিকারিকদের আরও অভিযোগ, অপেশাদার লোকজন মাটি কাটতে গিয়ে যথেচ্ছ ভাবে টেলিফোনের কেবল কেটে দিয়েছেন। এর ফলে, অরণ্যশহরের পুরাতন ঝাড়গ্রাম, রঘুনাথপুর, বিদ্যাসাগরপল্লি, মধুবন, ঘোড়াধরা, কদমকানন, বাছুরডোবা, বামদা, ভালুকখুলিয়ার মতো এলাকাগুলিতে বিএসএনএল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ল্যান্ডফোনও বিকল। বিএসএনএল-এর এক কর্মী জানালেন, ঝাড়গ্রাম ডিএম অফিস, এসডিও অফিস, এসপি অফিস, ব্লক অফিস, সিআরপি-র সদর কার্যালয়ের মতো বেশ কিছু সরকারি দফতরে ল্যান্ডলাইন ও ব্রডব্যান্ড সংযোগ নেই। ওই সব দফতর থেকে লোকজন এসে লাইন ঠিক করে দেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। ওই টেলিফোন কর্মীর কথায়, “পুরসভার ঠিকাদারের কর্মীরা এমনভাবে কেবল গুলি কেটে দিয়ে পাইপের সঙ্গে মাটি চাপা দিয়েছেন, যে সেগুলি খুঁজে বার করতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি।”
অভিযোগ, মাটি খোঁড়ার সময় ঠিকাদারের পক্ষ থেকে টেলিফোন কেন্দ্রে ফোন করে শেষ মুহূর্তে জানানো হচ্ছে। টেলিফোন দফতরের কর্মীরা পৌঁছনোর আগেই কেবল কেটে দেওয়া হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম শহরে ল্যান্ডলাইন সংযোগের সংখ্যা হাজার দেড়েক। যেখানে সেখানে কেবল কেটে দেওয়ার ফলে আটশো সংযোগ অচল হয়ে গিয়েছে।
এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একশোটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম টেলিফোন কেন্দ্রের টেলিকম অফিসার শুভাশিস মাইতি বলেন, “কাটা কেবলগুলি জুড়ে দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। টেলিফোনের কেবলগুলিকে বাঁচিয়ে মাটি খোঁড়ার জন্য পুরসভাকে অনুরোধ করা হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “বিষয়টা শুনেছি। ঠিকাদারকে ডেকে সতর্ক করা হবে।’’