Panchayat Board Dissolve

পঞ্চায়েতের বোর্ড ভাঙার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট  

পঞ্চায়েতের অফিসের চত্বরে জমায়েত থাকা সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে সে দিন পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দকুমার শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:৫৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বোর্ড গঠনের সভার আগে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে সিপিএমের এক জয়ী সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বামেরা অভিযোগ করে, বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে তাঁরা যাতে পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়তে না পারে, সে জন্য ওই ‘চাল’ চেলেছিল তৃণমূল। এর প্রতিবাদে তারা হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়। বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানি। তাতে হাই কোর্ট জানিয়েছে, নন্দকুমার ব্লকের শীতলপুর পশ্চিম পঞ্চায়েতের তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড ভেঙে দিতে হবে। তৈরি করতে হবে নয়া বোর্ড।

Advertisement

এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে শীতলপুর পশ্চিম পঞ্চায়েতের ২৩টি আসনের মধ্যে ১১টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল। বিজেপি পাঁচটি, সিপিএম পাঁচটি, এবং বামফ্রন্ট সমর্থিত নির্দল দু’টি আসন পায়। তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলেও সেখানে বামেরা বিরোধীদের সমর্থন নিয়ে বোর্ড করতে উদ্যোগী হয়েছিল বলে সে সময় খবর সামনে আসে। গত ১১ অগস্ট ছিল পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনের সভা। সভায় তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এবং নির্দল সদস্যরা উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু প্রধান নির্বাচনের সভা শুরুর ঠিক আগেই অফিসে আসে নন্দকুমার থানার পুলিশ। তারা পঞ্চায়েত ভোট গ্রহণের কয়েকদিন আগে একটি গোলমালের ঘটনার অভিযুক্ত হিসেবে সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুল জব্বরকে গ্রেফতার করে।

এর জেরে গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসের চত্বরে জমায়েত থাকা সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে সে দিন পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ সিপিএম সমর্থকদের হঠিয়ে জব্বরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। সিপিএম নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, তাঁদের তরফে প্রধান পদ প্রার্থী ছিলেন শেখ আব্দুল জব্বর। তাঁকে অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যরা যাতে সমর্থন করে প্রধান নির্বাচন করতে না পারে, সেই জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব পরিকল্পনা করে সভা থেকে জব্বরকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়েছেন। গোলমালের পরে সিপিএম, বিজেপি এবং নির্দল সদস্যরা প্রধান নির্বাচন সভা বয়কট করেন। ফলে তৃণমূল সদস্যরা সভায় প্রধান পদে তাঁদের দলের হাসিনা বিবিকে এবং উপ-প্রধানের পদে তপন বেরাকে নির্বাচিত করে বোর্ড গঠন করেন।

Advertisement

শেখ আব্দুল জব্বর আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে ছিলেন। পরে তিনি জামিন পান। সভা থেকে তাঁকে গ্রেফতার এবং প্রধান নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সিপিএমের আরেক পঞ্চায়েত সদস্য ফণীভূষণ গুছাইত। হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এ দিন ওই মামলার শুনানি হয়। এর পরে বিচারপতি শীতলপুর পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান বোর্ড ভেঙে দেওয়া এবং আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে নতুন বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

হা ইকোর্টের রায়ের বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘শেখ আব্দুল জব্বরকে পুরনো মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। জব্বর আমাদের প্রধান পদ প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক, বিডিও এবং পুলিশ চক্রান্ত করে প্রধান নির্বাচনের সভা থেকে ওঁকে গ্রেফতার করে। আদালতের রায়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত বোর্ড অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আদালতের রায়ে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।’’ এ বিষয়ে হইকোর্ট তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘হাই কোর্টের রায় শুনেছি। আমরা আইনকে মান্য করি। উর্দ্ধতন নেতৃত্ব যা নির্দেশিকা দেবেন, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন