ফাইল চিত্র।
হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাঁদের পরিকাঠামো নিয়ে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট।
পরিকাঠামোর অভাব, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া-সহ বেশ কয়েক দফা অভিযোগ তুলে রাজ্যের যে কোনও মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের জনা পনেরো পড়ুয়া। সেই মামলায় সোমবার ওই নির্দেশ দেন বিচারপতি অরিন্দম সিংহ।
পড়ুয়াদের আইনজীবী সুরজিৎনাথ মিত্র ও কল্লোল বসু জানান, ২০১১ সালে হলদিয়ায় ‘আই কেয়ার ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ অ্যান্ড ডক্টর বিসি রায় হসপিটাল’ তৈরি হয়। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) ওই কলেজ পরিদর্শন করে জানায়, সেখানে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। ২০১৬-’১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করে এমসিআই। তার জেরে সুপ্রিম কোর্টে যান কলেজ কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি নিযুক্ত করে। সেই কমিটি শর্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষাবর্ষে ভর্তির অনুমোদন দেয়
আইনজীবীরা জানান, পরিকাঠামো ঠিক হল কি না তা দেখতে ফের ওই কলেজ পরিদর্শন করেন এমসিআইয়ের প্রতিনিধিরা। কিন্তু তখনও পরিকাঠামোর অভাব থাকায় ২০১৭-’১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য কেন্দ্রকে সুপারিশ করে ওই প্রতিনিধি দল। সুপারিশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের সুপ্রিম কোর্টে যান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জানায়, তারা ওই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। তবে একই সঙ্গে জানায়, যে সব পড়ুয়া ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে ক্লাস করছেন, তাঁরা যাতে ঠিক সময়ে ডিগ্রি পান তা নিশ্চিত করতে হবে।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ফের কলেজ পরিদর্শন করলেও পরিকাঠামো নিয়ে এমসিআই প্রতিনিধি দল অসন্তোষ জানায়। আইনজীবীরা জানান, ইতিমধ্যে কলেজে অশিক্ষক কর্মীরা ধর্মঘট করায় নিয়মিত ক্লাস হয়নি। প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাতেও বসতে পারেননি পড়ুয়ারা। সেই কারণে অন্য মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ চেয়ে মধুরিমা বিশ্বাস-সহ জনা পনেরো ছাত্রছাত্রী হাইকোর্টে মামলা করেন। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে কলেজের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, কলেজে শিক্ষক নেই এমন অভিযোগ ঠিক নয়। পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর ব্যবস্থাও হচ্ছে।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সিংহ এ দিন কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাঁদের বক্তব্য হলফনামা আকারে পেশ করতে বলেন। মামলার আবেদনকারীরা পাল্টা হলফনামা জমা দিতে পারেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ নভেম্বর।
আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে ‘আই কেয়ার’-এর পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান লক্ষ্মণ শেঠ বলেন, ‘‘হাইকোর্ট কী রায় দিয়েছে তা দেখে মন্তব্য করব।’’ তবে পড়ুয়া ও কর্মচারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন কলেজের কর্মচারী ওয়েলফেয়ার ইউনিয়নের নেতা তথা হলদিয়ার পুর-পারিষদ আসগর আলি। তিনি জানান, হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে পড়ুয়া ও কর্মচারীদের সব রকম সহায়তা করা হবে।