দুষ্কৃতীদের গুলিচালনা হোক বা গাড়িতে তুলে ছিনতাই-মারধর— প্রায়ই নানা ঘটনার সূত্রে সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জাতীয় ও রাজ্য সড়ক। সিসিটিভি না থাকায় কোনও ঘটনার তদন্তে নেমে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে সমস্যায় পড়ে পুলিশ। এ বার জেলার জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নিল প্রশাসন।
পথ নিরাপত্তা সচেতনতা সপ্তাহ পালন উপলক্ষে জেলা ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে শুক্রবার তমলুক শহরের সুবর্ণ জয়ন্তী হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে জেলাশাসক রশ্মি কমল জানান, পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচার চলবে। একইসঙ্গে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হবে। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালালে বা সিট বেল্ট না বেঁধে গাড়ি চালালে যাতে সহজেই চিহ্নিত করা যায় সে জন্য জেলার সব রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। এ জন্য বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। পরিবহণ দফতরের সহযোগিতাও মিলেছে। সিসিটিভি বসানোর কাজ দ্রুত শুরু হবে বলেও জানান জেলাশাসক।
জেলার মেচেদা, তমলুক শহর, দিঘা, হলদিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে কয়েকটি জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। যদিও জাতীয় ও রাজ্য সড়কের অধিকাংশ এলাকায় সিসিটিভির নজরদারি নেই। সিসিটিভি থাকলে নজরদারির পাশাপাশি যে কোনও অপরাধের ঘটনায় অভিযুক্তদেরও সহজেই ধরা যাবে বলে মনে করছেন পুলিশের আধিকারিকরা। জেলাশাসক জানান, রাস্তার দু’ধারে ইট, বালি, স্টোনচিপস্ ফেলে রাখায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এ বার এ সবের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কড়া আইনি পদেক্ষেপও করা হবে।
জেলাশাসক জানান, হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে নন্দকুমার থেকে হলদিয়া পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে গাছ লাগানো-সহ সৌন্দর্যায়নের কাজও করা হবে। জেলা বন দফতরকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তমলুক শহরের প্রধান রাস্তার দু’ধারে হবে ফুটপাথ। শহরের মানিকতলা থেকে নিমতলা পর্যন্ত রাজ্য সড়কের দু’ধারে ফুটপাথ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্যের জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই এই কাজ হবে।
এ দিন ট্রাফিক পুলিশের জেলা আধিকারিক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘পথ নিরাপত্তা নিয়ে ছোট থেকেই সচেতন করতে স্কুলে স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বোঝানো হবে।’’