ghatal

বোর্ড বসলেও নিকাশি নালা হয়নি কেন, প্রশ্ন কেন্দ্রীয় দলের

রবিবার মনোহরপুর-১ এবং আজবনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়েছিল ওই দলটি। সোমবার তারা যায় দেওয়ানচক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। তার আগে ঘাটাল ভূমি দফতরে ঢোকেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪১
Share:

একাধিক বার আবেদন করেও আবাস যোজনায় বাড়ি মেলেনি। কেন্দ্রীয় দলের কাছে এমনই অভিযোগ জানাচ্ছেন এক গ্রামবাসী। রঘুনাথপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের দ্বিতীয় দিনের পরিদর্শনেও আবাস, একশো দিন-সহ নানা প্রকল্পে বিস্তর গরমিলের অভিযোগ সামনে এল ঘাটালে। ঘাটালের সাংসদ কোটার টাকায় উন্নয়নের পরিকল্পনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন উঠল। দু’দিনের পরিদর্শন শেষে সোমবার সন্ধ্যায় ঘাটাল ছাড়লেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

Advertisement

রবিবার মনোহরপুর-১ এবং আজবনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়েছিল ওই দলটি। সোমবার তারা যায় দেওয়ানচক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। তার আগে ঘাটাল ভূমি দফতরে ঢোকেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ভূমি দফতরে সিসি ক্যামেরা বসানো-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্রের টাকা এসেছিল। সেই টাকায় কাজ হয়েছে কি না তা ঘুরে দেখেন তাঁরা। সেখান থেকে পৌঁছন দেওয়ানচক পঞ্চায়েত অফিসে।

প্রসঙ্গত, ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী দেওয়ানচক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘আদর্শ গ্রাম’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। সেখানে একাধিক উন্নয়নের পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু দিনের শেষে ‘আদর্শ গ্রাম’ হিসেবে আলাদা ভাবে কোনও উন্নয়ন বা টাকা বরাদ্দ হয়নি। এদিন ওই পঞ্চায়েত অফিসে পৌঁছে সাংসদ কোটার টাকায় উন্নয়নের পরিকল্পনার পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এখানে উন্নয়নের পরিকল্পনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। জটিলতার জেরে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে লিখিত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রবিবারের মতো সোমবারও পঞ্চায়েত অফিসে বিভিন্ন ভাতা প্রাপকদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

গ্রাম পরিদর্শনে বেরিয়ে প্রথমে রঘুনাথপুরে যান তাঁরা। সেখানে একশো দিনের প্রকল্পে তৈরি একটি জলাশয় দেখে চোখ কপালে উঠে কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের। ছোট ডোবার আকারের ওই জলাশয়ের জন্য ১২০০ শ্রমিকের ব্যবহার দেখানো হয়েছে নথিতে। তাই ওই কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাটালের বিডিও সঞ্জীব দাসকে কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা বিষয়টি ভাল করে দেখতে বলেন। সেখান থেকে ওই গ্রামেই আবাস প্রকল্পে তৈরি একটি বাড়ি দেখতে যান তাঁরা। সেখানে কারা থাকেন জানতে চাওয়া হয়। জানা যায়, সেখানে গরু থাকে। সরকারি ওই ঘরটি কার্যত গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উপভোক্তার খোঁজ করতেই জানা গেল, তিনি পাশে পুরনো মাটির ঘরেই থাকেন।

এরপরই তাঁরা যান চৌকা গ্রামে। ওই গ্রামে যাওয়ার পথে মসরপুরে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় হওয়া একটি রাস্তার কাজ খতিয়ে দেখেন তাঁরা। কাজের বোর্ড, বিস্তারিত তথ্য আছে কি না জানতে চান। ছবিও তোলেন। চৌকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। মিড ডে মিলের খোঁজখবর নেন। চৌকা গ্রামে পরিদর্শন চলাকালীন পৌঁছে যান বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা বোর্ড টাঙানো হয়েছে অথচ কাজ হয়নি, এমন প্রকল্প দেখার আর্জি জানান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কাছে। স্থানীয় চৌকা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সাঁতরাপাড়া পর্যন্ত জল নিকাশি প্রকল্পে কাজ না হওয়ার অভিযোগ শোনা যায়। কেন্দ্রীয় দল গিয়ে দেখে, সেই কাজের বোর্ড টাঙানো হয়েছে কিন্তু গ্রামে নালার কাজ হয়নি। ঘাটালের বিডিওর দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা প্রশ্ন করেন, ‘‘নালা কোথায়?’’ বিডিও তখন কার্যত চুপ করে থাকেন। তারপরে আরও একটি পুকুর খননে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দেখা যায়, বোর্ড টাঙানো হলেও বাস্তবে সেই পুকুরটি খনন করাই হয়নি।

এরপরে দলটি ফের দেওয়ানচক-২ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে ফিরে যান। পরে ঘাটালের বিডিও সঞ্জীব দাস বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল তদন্ত করছেন। এই নিয়ে আমি কিছু মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন