নালিশ: অভিযোগ জানাচ্ছেন শিশুটির মা। —নিজস্ব চিত্র।
ফের শিশু চুরির অভিযোগ। আবারও তমলুক জেলা হাসপাতালের ঘটনা। তদন্তে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত মহিলার বাসস্থানও সেই ভগবানপুর এলাকায়। বছর খানেক আগেও জেলা হাসপাতালের সামনে থেকেই একটি শিশুকে চুরি করে নিয়ে যায় এক মহিলা। কিছুদিন পর পুলিশ ভগবানপুর থেকে শিশু-সহ ওই মহিলাকে ধরে।
বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য হাসপাতাল চত্বরেই ধরা পড়ে যান মহিলা। উদ্ধার হয় শিশু। তবে পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত মহিলার মানসিক সমস্যা রয়েছে।
কী হয়েছিল এ দিন? পাঁশকুড়ার মুড়াইল গ্রামের জসমিনা বিবি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন পনেরো দিন আগে। কিন্তু অসুস্থতার জন্য ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালেই ছিলেন। তাঁর দাবি, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রসূতি বিভাগে আসেন বছর পঞ্চাশের এক মহিলা। প্রতিটি শয্যার কাছে গিয়ে শিশুদের আদর করেন। জসমিনা বলেন, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম কোনও রোগীর আত্মীয়া বোধহয়। দু’টি কন্যাশিশুকে কোলে নিয়ে ফের বিছানায় রেখেও দেন। তারপর আমার মায়ের কোল থেকে আমার ছেলেকে নিয়ে আদর করতে করতে হাঁটতে শু
রু করেন।’’
জসমিনার মা জামিলা বিবি নাতিকে নিয়ে যাচ্ছে দেখে চিৎকার শুরু করেন। দ্বিতীয়তলের সিঁড়ির কাছে একজন আয়া ওই মহিলাকে জি়জ্ঞাসা করেন ‘বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাচ্ছ?’ তারপরেই ভিড় জমে যায়। ধরা পড়ে যান ওই মহিলা।
হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস জানালেন, “সকালে ওয়ার্ড মাস্টারের কাছ থেকে বাচ্চা চুরির চেষ্টা হয়েছে শুনেই পুলিশি ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাটা খুবই কম। তাছাড়া নির্মাণ কাজ চলছে তাই নজরদারিতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা সাময়িক, খুব শীঘ্রই আমরা কাটিয়ে উঠবো।’’
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, বিস্তর অসঙ্গতি ছিল মহিলার বক্তব্যে। নাম ঠিকানা বারবার ভুল নাম বলছিলেন। শেষে পর্যন্ত জানিয়েছেন বাড়ি ভগবানপুর থানা এলাকায়। কিন্তু কেন হাসপাতালে এসেছিলেন তার বিশ্বাসযোগ্য কোনও উত্তর দিতে পারেননি। তাই তাঁকে আটক করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানালেন, “বাচ্চা চুরির অভিযোগে একজন মহিলাকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে উনি মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে।’’