Clay Artist Contai

অকাল দীপাবলি, কুমোরপাড়ার চিন্তা আবহাওয়া 

অযোধ্যায় গর্ভগৃহে রামলালার বিগ্রহ স্থাপন করা হয়েছে। তার প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে শাস্ত্রীয় রীতি মেনে চলছে বিশেষ পুজো। শুক্রবার হচ্ছে অগ্নি উপাসনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৬
Share:

সামান্য রোদ উঠতেই প্রদীপ শুকনোর চেষ্টা। —নিজস্ব চিত্র।

দীপাবলির মতোই প্রদীপ তৈরি বরাত মিলেছে। সৌজন্য— অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। আগামী ২২ জানুয়ারি সেখানে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হলেও জেলা জড়ে বিজেপি প্রদীপ জ্বালানোর আর্জি জানিয়েছে। সেই মতো হুহু করে চাহিদা বেড়েছে মাটির প্রদীপের। কার্যত ‘অকাল দীপাবলি’তে প্রদীপের বায়না মিললেও গত কয়েক দিনের খারাপ আবহাওয়ায় চিন্তা বেড়েছে কুমোর পাড়ায়।

Advertisement

অযোধ্যায় গর্ভগৃহে রামলালার বিগ্রহ স্থাপন করা হয়েছে। তার প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে শাস্ত্রীয় রীতি মেনে চলছে বিশেষ পুজো। শুক্রবার হচ্ছে অগ্নি উপাসনা। মাঝে রবিবার বাদ দিলেই সোমবার রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওইদিন গৃহস্থদের বাড়িতে সন্ধ্যায় পঞ্চ প্রদীপ জ্বালানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি নেতানেত্রীরা। তাই মাটির প্রদীপ নিয়ে আচমকা চাহিদা বেড়েছে বাজারে। বিজেপি এক পুর প্রতিনিধি সুশীল কুমার দাস বলছেন, ‘‘পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডে ৫০ হাজারের বেশি মাটির প্রদীপ বিতরণ করা হচ্ছে। কুম্ভকারেরা দু’টাকা হিসেবে দর নিচ্ছেন। তাই তাঁদের বাড়ি থেকেই প্রদীপ সংগ্রহ করে সেগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।’’

কাঁথির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাচীন কুমোরপাড়া রয়েছে। খড়গপুর বাইপাস সংলগ্ন পদ্মপুখুরিয়া গ্রামে পুরুষানুক্রমে বাস করেন তাঁরা। কুম্ভকার পাড়ার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সপ্তাহ দুয়েক ধরে প্রচুর মাটির প্রদীপ তৈরির বরাত এসেছে। শঙ্করের প্রতিবেশী গোকুলচন্দ্র বেরা বলছেন, ‘‘অন্য বছরে এমন সময় মাটির জিনিসের কোনও চাহিদা থাকে না। তবে এবছর রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের জন্য বিজেপি এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাটির প্রদীপ খুঁজে বাড়িতে আসছে।’’ গোকুলের স্ত্রী জানাচ্ছেন, জ্বর হলেও সকলের আবেগ আর চাহিদার কথা মাথায় রেখে কয়েক দিন ধরে স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে প্রদীপ তৈরি করছেন।

Advertisement

গোটা পাড়ায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি পরিবারের বসবাস রয়েছে। সকলের বাড়িতেই কমবেশি চলছে মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হয়েছে কয়েকদিন ধরে। কার্যত রোদের দেখা নেই। সঙ্গে হচ্ছে বৃষ্টি। এর ফলে বরাত পেলেও কিছুটা চিন্তায় কুম্ভকারেরা। শঙ্কর বেরা নামে এক কুম্ভকার বলছেন, ‘‘শুক্রবার কাঁথি শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে হাজার তিনেক প্রদীপ দেওয়ার অর্ডার রয়েছে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে এখন আগুনে পুড়িয়ে সেই সব প্রদীপ প্রস্তুত করা হয়েছে।’’

ইতিমধ্যেই বাড়তি উপার্জনের আশায় কাঁথির বাইপাসের ধারে ১১৬ বি জাতীয় সড়কে অনেকেই আবার মাটির প্রদীপের পসরা নিয়ে বসেছেন। তাঁদের দাবি, যাতায়াতের পথে দিঘা ফেরত পর্যটকেরাও প্রদীপ নিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এখন উৎসাহ-উদ্দীপনা তুঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন