সিএবি-র জুনিয়র (অনূর্ধ্ব ১৭) লিগে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কলকাতায় নক-আউটে খেলার সুযোগ পেল কোলাঘাটের ক্রিকেট ক্লাব ‘এইট্টি’। ২৩-৩১ জানুয়ারি মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে হয়েছিল সিএবি জুনিয়র গ্রুপ লিগের ১০ নম্বর গ্রুপের খেলা। কোলাঘাট ক্রিকেট ক্লাব এইট্টি, কাঁথি এবিসিডি ক্লাব, খড়গপুর ব্লুজ, হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট ও দুর্গাপুর শ্রমিক নগর —এই পাঁচটি ক্লাব দলের মধ্যে লিগের খেলা হয়। চারটি ম্যাচে জিতে সেরার স্থান দখল করে ‘এইট্টি’।
সকাল বা বিকেলে রূপনারায়ণের ধারে একফালি মাঠে প্যাড-গ্লাভস পরা এক দল কিশোর-যুবকের ব্যাট-বল নিয়ে দৌড়ঝাঁপ দেখতে অভ্যস্ত এই ছোট্ট মফস্বল শহরের বাসিন্দারা। গত ২৫ বছর ধরে এটাই এ এলাকার চেনা ছবি। এর আগে তিন বার যোগ দিলেও সাফল্য মেলেনি। চতুর্থ বারে এই ক্লাব নকআউট পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল। ক্লাবের এই সাফল্য অর্জনের পিছনে রয়েছে এই এলাকার খেলা-পাগল কিছু মানুষের প্রবল জেদ আর অসীম ধৈর্য।
‘এইট্টি’র সূচনা ১৯৮০ সালে। কোলাঘাট শহরের উঠতি যুবকের উদ্যোগে স্থানীয় রেল কলোনির মাঠে শুরু হয় ক্লাবের পথচলা। এই ক্লাবের সঙ্গে প্রথম থেকেই যুক্ত আছেন সুজন বেরা। এক সময় তিনি কলকাতার তালতলা একতা ও ওয়াইএমসিএতে খেলতেন। এখন কোলাঘাট ইউনিয়ন হাইস্কুলের শিক্ষক সুজনবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে ৫০-৬০ ছেলে মিলে রেল কলোনির মাঠে ক্রিকেট খেলতাম। জেলার বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া হত ক্লাবের হয়ে। ১৯৮৮ সাল থেকে ক্লাবের খেলা শুরু রূপনারায়ণ নদীর ধারে কাঠচড়া ময়দানে। ১৯৯২ সালে ক্লাবের উদ্যোগে কোচিং দেওয়া শুরু হয়। মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার সকাল বা বিকেলে প্রশিক্ষণ চলে ৭৫ থেকে ৮০ জন ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের নিয়ে।
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে অনুশীলন করেই এখন কলকাতায় প্রথম ও দ্বিতীয় ডিভিশনের একাধিক দলে খেলেছেন জনা ১৫ ক্রিকেটার। প্রশিক্ষক কৌশিক ভৌমিক বলেন, ‘‘একসময় এখানে প্রায় ছ’বছর ধরে অনুশীলন করেছেন বাংলার অন্যতম পেস বোলার অশোক দিন্দাও। এ ছাড়াও আর অনেকেই কলকাতার নানা ক্লাবে এখন খেলছেন।’’ আরও এক প্রশিক্ষক দেবল চৌহান জানান, প্রশিক্ষণের জন্য মাসে মাত্র ২০ টাকা নেওয়া হয় ছাত্রদের কাছে। মূলত এই ক্লাবের শুভানুধ্যায়ীদের করা সাহায্যে চলছে প্রশিক্ষণ। এ বার এমন সাফল্য পাওয়ায় দুই প্রশিক্ষকই আশাবাদী। তারা বললেন, ‘‘আশাকরি সিএবি-র নকআউট পর্যায়ের খেলাতে আমাদের ছেলেরা ভাল ফল করতে পারবে।’’