মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শুধু বালিচক, হতাশ লোয়াদা

প্রশাসনিক বৈঠকে বেলদা-কেশিয়াড়ি রাস্তার মাঝে রেলগেটে উড়ালপুল তৈরির প্রসঙ্গ ওঠে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে বালিচকে উড়ালপুল হওয়া জরুরি। বালিচক উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০০:১২
Share:

অসম্পূর্ণ: অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে লোয়াদা সেতু। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

লোয়াদায় সেতু তৈরি হলেও হয়নি সংযোগকারী রাস্তার কাজ। আর বালিচকে উড়ালপুলের জন্য গাঁথা হয়নি একটি ইটও।

Advertisement

দীর্ঘদিন নানা টালবাহানায় আটকে ডেবরা ব্লকের এই দু’টি প্রকল্পের কাজই। বুধবার ডেবরায় প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দু’টি সেতু নিয়ে কিছু না বলায় হতাশ হয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরে প্রশাসনিক বৈঠকে বালিচকে উড়ালপুলের কাজ দ্রুত শুরুর কথা জানালেন মমতা। তবে লোয়াদা সেতু নিয়ে তিনি কিছু না বলায় হতাশ ওই এলাকার বাসিন্দারা।

প্রশাসনিক বৈঠকে বেলদা-কেশিয়াড়ি রাস্তার মাঝে রেলগেটে উড়ালপুল তৈরির প্রসঙ্গ ওঠে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে বালিচকে উড়ালপুল হওয়া জরুরি। বালিচক উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।” ২০১২ সালে শিলান্যাস হওয়ার পরেও এখনও উড়ালপুল তৈরি না হওয়ায় বাড়ছিল ক্ষোভ। তবে উড়ালপুল তৈরি শুরুর কথা শুনে খুশি বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকের পরে হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উড়ালপুল গড়ার কাজ দ্রুত শুরু করার কথা বলায় আমরা আপ্লুত। আশা করছি, এর পরে অন্তত জেলা প্রশাসনের কর্তারা উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ শুরু করতে উদ্যোগী হবেন।”

Advertisement

বালিচকে যখন খুশির হাওয়া তখন হতাশ লোয়াদা। ডেবরায় কাঁসাই নদীর উপরে ২০০২ সালে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। ২০০৭ সালে নদীর উপরের অংশে সেতুর অংশ তৈরির কাজ শেষ হয়। তবে তারপর থেকে নানা জটিলতায় থমকে রয়েছে সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ। ফলে এখনও চালু হয়নি সেতু।

স্থানীয়দের দাবি, ২০১১ সালে নির্বাচনী প্রচারে কাঁসাইয়ের উত্তর দিকে গোলগ্রামে এসে সংযোগকারী রাস্তা গড়ে সেতু চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। যদিও সমস্যা থেকে গিয়েছে সেই তিমিরেই। এখনও শীত-গ্রীষ্মে নদী খাত দিয়েই চলাচল করে যানবাহন। তবে বর্ষায় জল বাড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নদীর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্ত। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে বছর খানেক আগে গঠিত হয় ‘লোয়াদা কংসাবতী ব্রিজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি’। কমিটির সদস্যদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েও তাঁরা দাবিপত্র আগেই দিয়ে এসেছেন।

দু’দিনের সফরে জেলায় এসে ওই সেতু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলবেন বলে আশা করেছিলেন লোয়াদার বাসিন্দারা। তবে এ বিষয়ে মমতা কিছু না বলায় হতাশ স্থানীয়রা। নদীর দক্ষিণ প্রান্তে লোয়াদার বাসিন্দা মধুসূদন দেপোদ্দার বলেন, “উত্তর দিকের বাসিন্দাদের মতো খুব প্রয়োজন না হলেও ব্যাঙ্কের কাজে বা আত্মীয়দের বাড়ি যাওয়ার জন্য আমাদেরও নদীর ও পারে যেতে হয়। তাই এত বছর ধরে আমরা সেতুর দাবিতে সরব। তাই মুখ্যমন্ত্রী ডেবরায় এসে কিছু বলবেন বলে আশা করেছিলাম। উনি কিছু না বলায় আশাহত হলাম।”

এ বিষয়ে কমিটির সম্পাদক শুভ্রাংশ বেরার দাবি, “সেতু চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন আমরা লড়াই করছি। কমিটি গড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কালীঘাটে দাবিপত্রও দিয়েছিলাম। ২০১১ সালে প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার মুখ্যমন্ত্রী লোয়াদা সেতু নিয়ে কিছু না বলায় আমরা হতাশ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন