আন্ডারপাস নেই, লাইন পেরিয়েই ঝুঁকির যাত্রা

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেললাইন পার হওয়া এড়াতে সাবওয়ে তৈরির জন্য রেলের কাছে একাধিকবার দাবি জানানো হয়েছে। তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সমস্যার কথা স্বীকার করছেন মেচেদা স্টেশনের ম্যানেজার শম্ভুনাথ ঘোড়ইও।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫৭
Share:

বিপজ্জনক: এ ভাবেই চলে ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার। নিজস্ব চিত্র

সাবওয়ে নেই। বাধ্য হয়ে রেললাইন পারপার করেই যাতায়াত করেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। ছাত্রছাত্রীরাও রেললাইন পেরিয়েই স্কুলে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার মেচেদা স্টেশন থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরে এ ভাবে লাইন পারাপার চলায় যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হুঁশ নেই কারও।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেললাইন পার হওয়া এড়াতে সাবওয়ে তৈরির জন্য রেলের কাছে একাধিকবার দাবি জানানো হয়েছে। তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সমস্যার কথা স্বীকার করছেন মেচেদা স্টেশনের ম্যানেজার শম্ভুনাথ ঘোড়ইও। তিনি বলেন, ‘‘স্টেশনের কিছুদূরে এ ভাবে রেললাইন পারাপার খুব বিপজ্জনক। এ বিষয়ে রেলের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক প্রচার করা হয়। তবে ওখানে সাবওয়ে তৈরির পরিকল্পনার বিষয়ে জানা নেই।’’

রেল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশদ্বার ব্যস্ত মেচেদা স্টেশন দিয়ে হাওড়া থেকে খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দিঘা, হলদিয়াগামী বিভিন্ন লোকাল ট্রেন যাতায়াত করে। পাশাপাশি যাতায়াত করে দূরপাল্লার বহু ট্রেনও। কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই স্টেশনে ট্রেনে ওঠানামা করে। স্টেশনের কয়েকশো মিটার দূরেই রেললাইনের উত্তরদিকে রয়েছে গোপালগঞ্জ হাইস্কুল ও দক্ষিণদিকে রয়েছে মেচেদা বাজার ও কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড। রেললাইনের দক্ষিণদিকে মেচেদা পুরাতন, নতুনবাজার, কাকডিহি, গুলুড়িয়া, শান্তিপুর, আন্দুলিয়া এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা গোপালগঞ্জ হাইস্কুলে আসার জন্য প্রতিদিন সকালে হাইস্কুলের সামনে রেললাইন পার হয়। আবার বিকেলে ছুটির পর লাইন পার করে বাড়ি যায়।

Advertisement

একইভাবে, রেললাইনের উত্তরদিকে থাকা গোপালগঞ্জ, পূর্ব বহলা, নহলা, তাহালা, ফরিদবহলা, বাড়বহলা, বাড় মিহিটিকিরি গ্রামের স্কুল পড়ুয়া ও বাসিন্দারা ওই একই স্থান দিয়ে রেললাইন পার হয়। ফলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া তৃষ্ণাকে স্কুলে পৌঁছনোর জন্য রোজ রেললাইন পার করেই যাতায়াত করেন বহলা গ্রামের বাসিন্দা সোমা দোলই। তিনি বলছিলেন, ‘‘রেললাইন পার করতে ভয় লাগে। ফুটব্রিজ বা সাবওয়ে না থাকায় এ ভাবে পার হওয়া ছাড়া কোনও উপায়ও নেই।’’ মেচেদার কাকডিহি গ্রামের বাসিন্দা গোপালগঞ্জ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অরূপ সাহা, মিষ্টি দাসদের কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে স্কুলে যাতায়াতের পথে লাইন পার হতে হয়। পাশাপাশি অনেকগুলি রেললাইন থাকায় যে কোনও সময় ট্রেন চলে আসার ভয় তো থাকেই।’’ ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা নিয়ে গোপালগঞ্জ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একাদশী দাস বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের ১৭০০ পড়ুয়াদের এক তৃতীয়াংশ রেললাইন পার হয়ে আসা-যাওয়া করে। এ নিয়ে আমরা সবসময় উদ্বেগে থাকি। লাইন পারাপার এড়াতে এখানে আন্ডারপাস তৈরির জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি।’’

হাওড়া–খড়গপুর বিভাগের ডিভিশনাল রেলওয়ে ইউজারস্‌ কনসাল্টেটিভ কমিটির সদস্য শ্যামসুন্দর পাখিরা বলেন, ‘‘গোপালগঞ্জ হাইস্কুলের কাছে বিপজ্জনক ভাবে লাইন পারাপার বন্ধ করতে আন্ডারপাস তৈরির জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই দ্রুত পদক্ষেপ করা হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন