বৃহস্পতিবার স্পিড পোস্ট করার জন্য শালবনি শহরের উপ-ডাকঘরে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ সিংহ। কিন্তু যে কম্পিউটারে চিঠিপত্রের রেকর্ড নথিভুক্ত থাকে, সেটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই কাজ সারতে ৩০ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুরে ছুটতে হল তাঁকে।
গত কয়েক দিন ধরে এই উপ-ডাকঘরের কম্পিউটার খারাপ। যেহেতু এখন প্রায় সবই কম্পিউটারে হয়, ফলে কার্যত কাজ শিকেয়। স্পিডপোস্ট, রেজিস্ট্রি ডাক-সহ চিঠিপত্র সংক্রান্ত সব কাজই এখন বন্ধ এই এলাকায়। জরুরি চিঠিপত্র পাঠানোর থাকলে মেদিনীপুরে ছুটতে হচ্ছে শালবনির ব্লকের মানুষকে। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে পোস্টমাস্টার গোপাল শিকদার বলেন, “যান্ত্রিক গোলযোগ হলে কিছু করার থাকে না। কম্পিউটার মেরামত করার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দিনদুয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” মেদিনীপুরের সিনিয়র পোস্টমাস্টার বিকাশকান্তি মিশ্রও বলেন, “শালবনিতে কম্পিউটার খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। মেরামতি শুরু হয়েছে।”
তবে এমনিতেও শালবনিতে ডাক পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ। অভিযোগ, কাছাকাছি এলাকায় চিঠিপত্র পৌঁছতেই সপ্তাহ পার হয়ে যায়। দিনের পর দিন চিঠি পড়ে থাকে ডাকবাক্সে। কখনও তা পড়ে থাকে ডাকঘরেই। স্থানীয় বাসিন্দা তপন মাহাতো, অনিল মাহাতোদের বক্তব্য, কলকাতায় চিঠি পৌঁছে গেলেও জেলার অন্য প্রান্তে সময় মতো চিঠি পৌঁছয় না। মেদিনীপুরের মুখ্য ডাকঘরের এক আধিকারিক বলেন, “অনিয়মিত চিঠি বিলির অভিযোগ আসে মাঝেমধ্যেই। আসলে কর্মী সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সে কারণেই সমস্যা।” তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, একই অভিযোগ যাতে পরবর্তী সময়ে না-ওঠে তাই নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে। ডাকঘরে যে সব চিঠির রেকর্ড থাকে অর্থাৎ যেগুলো প্রাপকদের দিয়ে ‘রিসিভ’ করাতে হয়, সেগুলোকে বলা হয় ‘অ্যাকাউন্টেবল’। ওই আধিকারিকের কথায়, “অ্যাকাউন্টেবল চিঠিগুলো সময়ের মধ্যেই বিলি হয়ে যায়। কারণ এ ক্ষেত্রে একটা চাপ থাকে। চিঠি বিলি না হলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিপাকে পড়ার আশঙ্কা থাকে।” সমস্যা হয় ‘নন-অ্যাকাউন্টটেবল’ চিঠির ক্ষেত্রে। তবে এ ঘটনা অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ডাকঘর সূত্রে খবর, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।