পেটের রোগে মৃত্যু প্রৌঢ়ের, রাজনীতি  

জেলা হাসপাতাল সূত্রের অবশ্য দাবি, আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি ফণীন্দ্র সিংহের (৬২) কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটের রোগের জন্য ওই বৃদ্ধের শরীরে জলাভাব দেখা দেওয়ায় তাঁর রেচনক্রিয়ায় জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:১১
Share:

ডেবরার গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র

আন্ত্রিকে আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ের শরীরে জলাভাব দেখা দেওয়ায় দিন কয়েক আগে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকাকালীন বুধবার মৃত্যু হল ওই ব্যক্তির। এই মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী কাজিয়া।

Advertisement

নয়াগ্রাম ব্লকের আড়রা পঞ্চায়েতের বাকসা গ্রামে আন্ত্রিক ছড়ানোর জন্য পরস্পরকে দুষছে তৃণমূল ও বিজেপি শিবির। জেলা হাসপাতাল সূত্রের অবশ্য দাবি, আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি ফণীন্দ্র সিংহের (৬২) কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটের রোগের জন্য ওই বৃদ্ধের শরীরে জলাভাব দেখা দেওয়ায় তাঁর রেচনক্রিয়ায় জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

দিন সাতেক আগে বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ফণীন্দ্র। তাঁর বড়ছেলে বিদ্যাসাগর বলেন, ‘‘আমার বাবার পেটের রোগ হয়েছিল। আশেপাশের এলাকার আরও কয়েকজন একই রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থতার জন্য অসম্ভব দুর্বল হয়ে পড়েন।’’ গত বৃহস্পতিবার পরিজন‌েরা ফণীন্দ্রকে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। শনিবার জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। এ দিন সকালে ফণীন্দ্রের মৃত্যু হয়। বিদ্যাসাগর জানান, তাঁর দু’বছরের ছেলে শিবানীশঙ্কর ও স্ত্রী তুলসিও সম্প্রতি আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এখন দু’জনেই সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসেছে।

Advertisement

নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় তৃণমূল থাকলেও আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। আবার বাকসা গ্রামটি যে বুথের অধীনে, সেই বালিমুণ্ডি বুথটি তৃণমূলের দখলে। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যও তৃণমূলের। তাই আন্ত্রিককে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক যুদ্ধে নেমে পড়েছে দু’পক্ষই। খবর পেয়ে বার চারেক ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের মেডিক্যাল টিম গ্রামে গিয়েছিল।

দিন কয়েক আগে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম বাকসা গ্রামে যান। নয়াগ্রাম হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীনদের সম্পর্কে খোঁজ খবরও নেন সাংসদ। পরে সিএমওএইচ ও জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ও নয়াগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বাকসা পরিদর্শনে যান। উজ্জ্বলের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-র ক্ষমতাসীন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এলাকার জনস্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে একেবারেই সচেতন নন। তাই এমন সমস্যা হয়েছে। যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। তবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু আন্ত্রিকে হয়েছে বলে জানা নেই।’’

বিজেপি-র নয়াগ্রাম মণ্ডল সভাপতি উৎপল দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত গুলির সঙ্গে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করা হচ্ছে। আক্রান্ত এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের উদাসীনতাতেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে।’’

ঝাড়গ্রামের সিএমওইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধের আন্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ হয়ে গিয়েছিল। কিডনি-র সমস্যার চিকিৎসার জন্য তাঁকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’ কেন তা হলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ফণীন্দ্র? সিএমওএইচ বলেন, ‘‘সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ সিএমওইচ জানান, বাক্সায় ৪০ জন আন্ত্রিকে আক্রান্ত হন। ৭ জনকে নয়াগ্রামের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁরা এখন সুস্থ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন