প্রবীণ বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল ও রেলশহরের পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে পাশে নিয়ে মানস ভুঁইয়া।
শিয়রে পুরভোট। ভোটের দিন এখনও ঘোষণা না হলেও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে আসরে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি। খড়্গপুরে ক্ষমতা ধরে রাখতে তৎপর কংগ্রেসও। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগে রবিবার খড়্গপুরের গোলবাজারে গুজরাতি মিত্র মণ্ডপে এক প্রস্তুতি বৈঠক বসেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা জ্ঞান সিংহ সোহনপাল (চাচা), প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা খড়্গপুরের পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে, শহর সভাপতি অমল দাস প্রমুখ। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে মূলত ওয়ার্ড ভিত্তিক সংগঠনের খুঁটিনাটি ও প্রচার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। চাচার নেতৃত্বেই পুর যুদ্ধে নামার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় এ দিনের বৈঠকে।
দলীয় সূত্রে খবর, এ দিনের প্রস্তুতি বৈঠকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড কমিটির এক জন করে প্রতিনিধির সঙ্গে পুর নির্বাচনের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রচারের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রতি বুথে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপরও জোর দেওয়া হয়। খড়্গপুরের পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে জানান, তাঁরা প্রতিটি বুথ থেকে চার জন কর্মীর নাম চেয়েছি। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে সেই নাম জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই কর্মীদের নির্বাচনের নানা কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রচারও শুরু হবে। ২০ মার্চের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানসবাবু বলেন, “প্রার্থী তালিকা ঘোষণার অপেক্ষা না করে প্রচার শুরু করতে হবে। কংগ্রেসে প্রার্থী নয় দল বড়। চাচার নেতৃত্বে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থী বাছাই হবে।” তিনি বলেন, “খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূল কিছুদিন ক্ষমতায় ছিল। রাজ্যেও এখন তাদের সরকার রয়েছে। তা সত্ত্বেও তারা কী কী কাজ করেনি, আমরা জনসাধারণের সামনে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরব। খড়্গপুরের জন্য কংগ্রেস কী করছে, তাও মানুষকে জানাব।” মানসবাবু জানান, এ দিন সকালে ঘাটাল মহকুমায় ৫টি পুরসভার ৬০টি আসনে ভোট নিয়েও বৈঠক হয়েছে। কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ, “গত বছর সিপিএম ঘাটালে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেয়নি। এ বার তাঁরা যত শীঘ্র সম্ভব প্রায় সবক’টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করবেন।”
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে চতুর্থ স্থানে ছিল কংগ্রেস। প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। এ প্রসঙ্গে মানসবাবু বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান হয়তো মানুষকে সাময়িকভাবে প্রভাবিত করেছিল। কিন্তু মোদীর ন’মাসের শাসন খড়্গপুরের মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। রবিশঙ্কর পাণ্ডের নেতৃত্বে খড়্গপুর পুরসভা আবার নতুনভাবে শহরকে সাজিয়ে তুলবে।”
খড়্গপুরে জয় নিয়ে প্রত্যয়ী মানসবাবুর কথায়, “খড়্গপুরের মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন। সাধারণ মানুষ পুরসভার ক্ষমতাও কংগ্রেসের হাতে তুলে দেবে।” প্রস্তুতি বৈঠক শেষে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে মানসবাবু বলেন, “রানাঘাটের ঘটনায় পুলিশ এক লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছে। পুলিশের অবস্থা এমনই, যে দুষ্কৃতী ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করতে হচ্ছে। রাজ্যের ডিজিরা সব কালা, বোবা ও কানা হয়ে গিয়েছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীকেই দুষ্কৃতী ধরতে হবে।” আজ, সোমবার রানাঘাটে যাবে কংগ্রেসের পরিষদীয় দল। যাবেন প্রদেশ নেতা মানস ভুঁইয়াও।