গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবল-সহ দুজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে চণ্ডীপুর থানার মগরাজপুর বাজারের কাছে দিঘা-কলকাতা সড়কের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলেন হাওড়ার শিবপুর থানার কনস্টেবল মানস শীট ও তাঁর একসঙ্গী বুদ্ধদেব মাইতি। দুজনেরই বাড়ি চণ্ডীপুরের খাগদা বীরগ্রামে। হাওড়া পুলিশ কমিশনারটের অধীনে থাকা শিবপুর থানার ওই কনস্টেবল নিজের বাড়ি কাছে সড়কে গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ায় অস্বস্তিতে পুলিশও। ধৃতদের শুক্রবার তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সড়কে গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে শিবপুর থানার এক পুলিশ কনস্টেবল সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটকে জানানো হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুরের খাগদা বীরগ্রামের বাসিন্দা মানস শীট পুলিশের কনস্টেবল পদে আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে কর্মরত ছিলেন। বছর খানেক আগে শিবপুর থানায় তাঁকে বদলি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ মানস তাঁর কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে দিঘা – কলকাতা সড়কে দাঁড়িয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে মালবোঝাই গাড়ি আটকে তাঁদের থেকে টাকা তুলছিল বলে অভিযোগ। এই সময় একই সড়কে টহলরত চণ্ডীপুর থানার সাব-ইনস্পেক্টর তাপস দাস ওই তোলাবাজির ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ বাহিনী সেখানে হানা দিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে।
চণ্ডীপুর থানার অফিস থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলার পুলিশ মহলে আলোড়ন পড়ে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে ধৃত ওই কনস্টেবলের পরিচয় নিয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারটের কাছে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিঘা-কলকাতা সড়কে রাতে দিঘা থেকে প্রচুর মাছ, মাছের খাবার বোঝাই লরি ও বাস যাতায়াত করে। পুলিশে কর্মরত মানস বাড়িতে এলে রাতে তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে বাড়ির কাছে মগরাজপুরে দিঘা-কলকাতা সড়কে ওইসব গাড়ি আটকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন। কিন্তু পুলিশে কর্মরত থাকায় এ নিয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেন না। এদিন ওই পুলিশ কনস্টেবল গ্রেফতার হওয়ার পর খবর পেয়ে থানায় এসেছিলেন মানসের বাবা বাণেশ্বর শীট। ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অস্বীকার করে তাঁর দাবি, ‘‘মানস বন্ধুদের সঙ্গে গতকাল রাতে আড্ডা মারতে বেরিয়েছিল। গাড়ি আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ ঠিক নয়।’’