Illegal Construction

সৈকতের হোম স্টে-তে কোপ, বিতর্ক

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বক্তব্য, তাঁদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে কীভাবে হোমস্টে চালাতে হয়, তা নিয়ে ব্লক অফিসের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্দারমণি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৪
Share:

চলছে ভাঙার কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

সৈকত এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙল প্রশাসন। কিন্তু মন্দারমণির সৈকতের ওই নির্মাণ ভাঙা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। বড় হোটেল বা নির্মাণ না ভেঙে সরকারি অনুদানে তৈরি হোম স্টে-র উপরে কেন প্রশাসনের ‘কোপ’ পড়ল, সেই প্রশ্নে দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ, রামনগর-২ এর বিডিও এবং পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন হোটেলের মালিক এবং এলাকাবাসী।

Advertisement

রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণির পার্শ্ববর্তী রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দী অঞ্চলের দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর, অরকবনিয়া এলাকায় মেরিন ড্রাইভের গা ঘেঁষে সরকারি অনুদানে একাধিক হোম স্টে গড়ে উঠেছে। এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারপরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ভর্তুকি এবং ঋণ দেওয়া হয় ওই সব হোম স্টে তৈরি করার জন্য। ব্লক প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই ওই সমস্ত হোম স্টে তৈরি হয়। কিন্তু যে চারটি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে দুটি হোমস্টে এবং দুটি ছোট মাপের লজ রয়েছে। এতেই বিতর্ক দেখা গিয়েছে।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বক্তব্য, তাঁদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে কীভাবে হোমস্টে চালাতে হয়, তা নিয়ে ব্লক অফিসের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তার পরেই বাড়ির লাগোয়া দুটি করে ঘর তৈরি করা হয় সরকারি অনুদানের মাধ্যমে। অথচ কয়েকদিন আগে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তরফে সেগুলি ভাঙার নির্দেশের নোটিস আসে তাঁদের কাছে। তাই এদিন ওই সব নির্মাণ ভাঙতে গেলে প্রশাসনের লোকেদের ঘিরে এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের প্রশ্ন, ভাঙাই যদি হবে, তা হলে আগে অনুমোদন দেওয়া হল কেন? এবং সৈকতের বুকে বড় বড় বেআইনি নির্মাণ কেন ভাঙা হচ্ছে না!

Advertisement

যদিও প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি জায়গা দখল করে ওই চারটি নির্মাণ গড়ে উঠেছিল। এটা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। হাই কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন ওই চারটি নির্মাণ আংশিকভাবে ভাঙা হচ্ছে। বিক্ষোভ থামলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ঘন্টাখানেক আলোচনার পর হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করার পক্ষে সম্মতি জানান হোটেল মালিকেরা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হোটেলগুলির মালিকেরা নিজেরাই সম্পূর্ণ নির্মাণ ভেঙে নেবেন বলে জানিয়েছেন। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুজন কুমার দত্ত বলেন, ‘‘উচ্চ আদালতের নির্দেশেই বেআইনি নির্মাণগুলি আংশিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশ ওঁরা নিজেরাই ভেঙে নেবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।’’

কিন্তু দিনের শেষে প্রশ্ন— সব কিছু না যাচাই করেই বা কেন সরকারি উদ্যোগে হোম স্টে গড়ে তোলার অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন? এ নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরাও। এ প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ সুভাষকুমার দত্ত বলছেন, ‘‘মন্দারমণিতে প্রায় সব জায়গাতেই সমুদ্রের উপরে হোটেল এবং লজ নির্মাণ করা হয়েছে। সরকার এবং প্রশাসন তাদের ক্ষেত্রে কেন কঠোর পদক্ষেপ করছে না? শুধুমাত্র চুনোপুটিদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নিলে হবে!’’ এতে সরব বিজেপিও। স্থানীয় বিজেপি নেতা অমিত শঙ্কর দাস বলেন, ‘‘এলাকায় বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তৃণমূল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন