নিরাশ্রয়: ডাল ভেঙে পড়ে আছে বকের ছানা।
ছানাপোনাদের নিয়ে নিশ্চিন্তেই দিন কাটছিল তাদের। কিন্তু ডালপালা ছেঁটে গাছের সৌন্দর্য বাড়াতে গিয়ে তাদের ঘরছাড়া করল হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। আচমকা ঠাঁই হারিয়ে ছানাপোনাদের কেউ গেল কুকুর-শিয়ালের পেটে। কেউ বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু। গাছ কাটতে গিয়ে পাখিদের এমন দশা করায় বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন। এমন অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা।
হলদিয়া বার্ড লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন সদস্য সুপ্রিয় মান্না জানান, হলদিয়ার তিনদিকে নদী থাকায় এখানে নানা প্রজাতির বক আসে। যার মধ্যে শামুখখোলের সংখ্যা বেশি। এছাড়া অন্য বিদেশি পাখিও আসে এই সময়। বর্ষার আগেই তারা ডিম পাড়ে। বর্ষার সময় খাদ্য বেশি পাওয়া যাওয়ায় ছানাদের বড় করতেও তাদের অসুবিধা হয় না। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে গাছ কেটে পাখির বাসা নষ্ট করা অন্যায় হয়েছে।’’ দোষীদের কেন শাস্তি হবে না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বনাধিকারিক স্বাগতা দাশ বলেন, ‘‘এটা অনৈতিক কাজ হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। এভাবে বাচ্চা-সহ পাখির বাসা কেউ নষ্ট করতে ভাবাই যায় না।’’ আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই বন্দর প্রশাসনের ডেপুটি ম্যানেজার তনিমা ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতি বছর বর্ষার সময় আমরা গাছ ট্রিমিং করি। এ বছরও তা করা হয়েছে।’’ বকের ছানা সহ বাসা ভাঙার ঘটনা নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘‘বক খুব নোংরা করে এবং এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়।’’
বন্দর কর্তৃপক্ষের এমন যুক্তি শুনে অবাক পরিবেশবিদ এবং একটি পরিবেশ সংগঠনের সম্পাদক মৌসম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই অন্যায় হয়েছে।’’ বন্দরের পরিবেশ সেলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি জানান, বন্দরের এমন অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে রাজ্য ও কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে তিনি অভিযোগ জানাবেন।