Coronavirus in Midnapore

করোনায় মৃতের দেহ পরিবারকে, সমাহিতও করা হল গ্রামে

বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত ওই বৃদ্ধের দেহ বৃহস্পতিবার ভোরে পরিজনদের দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

মৃত্যুর শংসাপত্রে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ‘কোভিড পজিটিভ’ নিউমোনিয়ায়। তাও এক বৃদ্ধের মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে প্রবল অস্বস্তি শুরু হয়েছে।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত ওই বৃদ্ধের দেহ বৃহস্পতিবার ভোরে পরিজনদের দেওয়া হয়। জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর কথায়, ‘‘প্রশাসনের তোষণ নীতির ফলে সাধারণ মানুষকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর ঝাড়গ্রামবাসীকে গিনিপিগ বানিয়ে করোনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। এ দিনের ঘট‌না সব কিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’

সূত্রের খবর, প্রবল শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে বুধবার গভীর রাতে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক বৃদ্ধকে নিয়ে এসেছিলেন পরিজনেরা। উপসর্গ দেখে করোনা সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয় বিশেষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে। অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। গ্রামের অদূরে এলাকার জনবহুল বাজারে তাঁর ছেলের দোকানও আছে।

Advertisement

করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর দেহ তুলে পরিজনদের হাতে দেওয়া হল, সেই জবাব অবশ্য মেলেনি। এ দিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ গ্রামের কবরস্থানে ওই বৃদ্ধের দেহ করব দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, আক্রন্ত বৃদ্ধের দেহ প্রথমে দিতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মৃতের পরিজনেরা দাবি করেন, জেলা প্রশাসন থেকে তাঁদের দেহ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলার এক প্রশাসনের এক আধিকারিকের হস্তক্ষেপে ভোর চারটে নাগাদ দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মৃতের ছেলে জানান, ‘‘শোকের আবহে ডেথ সার্টিফিকেটে কী লেখা আছে দেখা হয়নি। মন মেজাজ ভাল নেই। আজ সকালে বাবাকে গোর দেওয়া হয়েছে।’’ অ্যাসেসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্টবেঙ্গল-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা অবশ্য বলেন, ‘‘ধর্মীয় রীতি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনায় মৃতের শেষকৃত্য প্রশাসনের করার কথা। করোনা আক্রান্তের দেহ কোনও ভাবেই পরিবারের হাতে দেওয়ার কথা নয়।’’

জেলায় প্রতিদিন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে। তার মধ্যে এমন অভিযোগ ওঠায় করোনা ঠেকাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি এবং এক অতিরিক্ত জেলাশাসকও সংক্রমিত হয়েছেন। তার ফলে, জেলা পরিষদ বন্ধ রাখা হয়েছে।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন