প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ ভারত ফেরত রোগী এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা পরিজনেদের সকলেরই করোনা পরীক্ষা করা হবে। সূত্রের খবর, স্থানীয় প্রশাসনিকস্তরে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই এই পদক্ষেপ।
ইতিমধ্যে দক্ষিণ ভারত থেকে রোগী এবং রোগীর পরিজন মিলিয়ে ১৪৬জন পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছেন বলে সূত্রের খবর। দাঁতনের সীমানা পেরিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে চেপেই এঁরা সকলে এসেছেন। সকলকেই নিভৃতবাসে (কোয়রান্টিন) পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, খড়্গপুর আইআইটির হাসপাতালে এঁদের নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। শুক্রবার এখানে এঁদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়েছে।
দক্ষিণ ভারত থেকে দাঁতনের সীমানা পেরিয়ে যে সব রোগী এবং রোগীর পরিজনেরা পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছেন, তাঁদের কি সকলের করোনা পরীক্ষা করা হবে? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার স্বীকারোক্তি, ‘‘ওঁদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষাও করা হবে।’’ তিনি মানছেন, সকলকে আপাতত খড়্গপুর আইআইটির হাসপাতালে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ১৪৬ জন ফিরেছেন। আরও প্রায় ১৫০ জন ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। লকডাউনে গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসা এবং চলাচলের ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। অবশ্য দিন কয়েক ধরে অনেকে দাঁতনের সীমানায় আটকে থাকছিলেন বলে অভিযোগ। ওড়িশা পেরিয়ে তাঁদের বাংলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। পরে প্রশাসনিক পদক্ষেপে একে একে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে যেমন রোগী এবং রোগীর পরিজন মিলিয়ে ১৪৬ জন ঢুকেছেন। এখনও অনেকে সীমানায় আটকে রয়েছেন।
সীমানায় আটকে থাকা এক মহিলার কথায়, ‘‘আমি আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলাম ভেলোরে। কাল বিকেল থেকে সমানে এই রাস্তার ধারেই রয়েছি। খাওয়াদাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। কিচ্ছু নেই। ছোট ছেলেমেয়ে, বয়স্ক সকলেই রয়েছেন। সামান্য জলও পাচ্ছি না। যেটুকু পয়সাকড়ি ছিল তা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে চলে এসেছি। এখানে এসে কিচ্ছু পাচ্ছি না।’’ অন্য একজনের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও সাহায্য মিলছে না। সাহায্য চাইতে গেলে বলা হচ্ছে, এখানে এসেছেন কেন।’’ আরেক মহিলার কথায়, ‘‘করোনা কি মারবে, আমরা এমনিতেই মরে যাবো। এখানে যে ভাবে আমরা রয়েছি তাতে এমনিতেই করোনা হয়ে যাবে।’’
পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, সবদিক দেখে গুরুতর অসুস্থদের একে একে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, সীমানা পেরিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলেও দক্ষিণ ভারত ফেরত রোগী কিংবা রোগীর পরিজনদের কাউকেই সরাসরি বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুরুতে সকলকেই খড়্গপুরের আইআইটি হাসপাতালে নিভৃতবাসে পাঠানো হচ্ছে। রোগী ও সকলের করোনা পরীক্ষাও করা হবে। এ নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে জেলার স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রের কথা, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’