Coronavirus

থেমে নেই জীবনের গান, পটে করোনা-কথা

রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণের কাহিনি থেকে শুরু করে পাল্‌স পোলিয়ো, কন্যাশ্রীর সচেতনতা প্রচার পটের গানে হয়েই থাকে।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল 

তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০১:৪৪
Share:

পট এঁকেই করোনা সচেতনতায় শিল্পী। নিজস্ব চিত্র

বিপর্যয়ে থেমে থাকে না শিল্প। বরং শিল্পী-মনে জেগে ওঠে বাড়তি দায়বদ্ধতা। মেদিনীপুরের মাটির পটশিল্পও তার ব্যতিক্রম নয়।

Advertisement

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গোটা বিশ্ব এখন ধ্বস্ত। দেশে দেশে চলেছে মৃত্যু মিছিল। ভারতবর্ষ জুড়েও জারি হয়েছে ঘরবন্দি থাকার নির্দেশ। কিন্তু লকডাউনের মধ্যেও নিষেধ উড়িয়ে পথে বেরোচ্ছেন অনেকে, জমছে ভিড়। এই সঙ্কটে মানুষকে সচেতন করার মাধ্যম হিসেবে তাই পটের ছবি আর গানকেই হাতিয়ার করে তুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটশিল্পী আবেদ চিত্রকর। করোনাভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে লকডাউনের গুরুত্ব বোঝাতেই পট এঁকেছেন ও গান বেঁধেছেন আবেদ। আর গান গেয়েছেন আবেদের স্ত্রী সায়রা চিত্রকর। ছবি আঁকা আর গানে গলা মেলানোয় সাহায্য করেছেন আবেদের দিদি আলেকজান চিত্রকর এবং প্রতিবেশী বুলটি চিত্রকরও।

রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণের কাহিনি থেকে শুরু করে পাল্‌স পোলিয়ো, কন্যাশ্রীর সচেতনতা প্রচার পটের গানে হয়েই থাকে। এ ক্ষেত্রে রেওয়াজ হল, পটশিল্পীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছবি দেখিয়ে আর গান গেয়ে নিজেদের বার্তা তুলে ধরেন। করোনার কোপে সেই ঘুরে বেড়ানো এখন বন্ধ। তাই করোনা সচেতনতায় বাঁধা পটের গান প্রচারে ভরসা সমাজমাধ্যম। চণ্ডীপুর এলাকার হবিচক, নানকারচক ও মুরাদপুর গ্রামে বহু পটশিল্পীর বাস। তাদের শিল্পকর্ম সমাজমাধ্যমে সারা বছরই প্রচারিত হয়৷ আবেদের করোনার গানের ভিডিয়োও ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়েছে।

Advertisement

রবিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে আবেদ বললেন, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন ভয়। মানুষকে বুঝতে হবে, প্রাণে বাঁচতেই এখন ঘরবন্দি থাকাটা জরুরি৷ পট এঁকে, গান গেয়ে মানুষকে সেই বোঝানোর কাজটাই করার চেষ্টা করেছি।’’ পটের গানে আবেদের আবেদন, দেশজুড়ে লক ডাউন জারি/ মেনে চল এখন, ও জনগণ/ আসবে ফিরে জেনো সুদিন/ বাজবে মোদের সুখের বীণ/ করোনাভাইরাস হবে গো লীন, বাঁচবে তো জীবন।

ঘরবন্দি থেকেও পটশিল্পীর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে প্রশাসন। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘করোনা সচেতনতা নিয়ে পটের গান ও ছবি সমাজমাধ্যমে দেখেছি। এমন প্রয়াস খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। এই পরিস্থিতিতে পটশিল্পীদের দিয়ে এলাকায় প্রচার চালানোর উপায় নেই। তাই আমরা ট্যাবলো ও হোর্ডিং দিয়ে প্রচার চালাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন