Coronavirus in India

হাসপাতালের দুই ওয়ার্ড সাময়িক বন্ধ

দেশের ১৭০টি জেলাকে ‘হটস্পট’ হিসাবে বুধবার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫১
Share:

কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরিতে বাধা। রাস্তা ঘেরাও। নিজস্ব চিত্র

এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু। তার পরেই সাময়িক বন্ধ তমলুক জেলা হাসপাতালের দু’টি বিভাগ। বৃহস্পতিবার দিনভর জীবাণুমুক্তের পরে বিকেলে ফের চালু হল বিভাগ দু’টি।

Advertisement

দেশের ১৭০টি জেলাকে ‘হটস্পট’ হিসাবে বুধবার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। এই পরিস্থিতিতে তমলুকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছিল মঙ্গলবার। বুধবার দুপুরে হাসপাতাল সুপার ‘ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ড’ এবং ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’ (সিসিইউ) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। ওই দুই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের হাসপাতালের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফের আর একটি নির্দেশ দিয়ে ওই দুই বিভাগ খোলা হবে বলে জানানো হয়।

জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, নন্দকুমার এলাকার ওই প্রৌঢ়া শ্বাসকষ্ট এবং অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁকে প্রথমে ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে রাখা হয়। শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। প্রৌঢ়ার লালারসের নমুনা মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই মঙ্গলবার রাতে ওই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার বিকেলে প্রৌঢ়ার করোনা-নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।

Advertisement

বড়মা’র খতিয়ান

• করোনা আক্রান্ত: ১৪ জন
• ছাড়া পেয়েছেন: ৭ জন
• বাকি সাত করোনা আক্রান্ত ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন
• বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নতুন করে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি
(তথ্য: জেলা স্বাস্থ্য দফতর)

হাসপাতালের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার বিকেলে প্রৌঢ়ার নমুনার রিপোর্ট আসার আগেই হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তা করতে হয়নি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ফিমেল মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট জীবাণুমুক্ত করা হয়। সে জন্য ওই দুই ওয়ার্ড এ দিন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলা হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘ওই প্রৌঢ়ার নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্ট আমাদের হাতে আসার আগে মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। বুধবার বিকেলে করোনা-নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই দুটি ওয়ার্ড বুধবার দুপুর থেকে বন্ধ রাখা হয়েছিল। ওই দুটি ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ফের চালু করা হয়েছে।’’

অন্যদিকে, করোনা সংক্রমণের নিরিখে ‘হটস্পট’ তালিকায় থাকা পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন। এ দিন থেকেই তমলুক-সহ বিভিন্ন বাজার এলাকায় লোকজনের জমায়েত এড়াতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তমলুকের নোনাকুড়ি, ডিমারি বাজার, ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকার আনাজ এবং মাছের দোকানগুলিকে ফাঁকা জায়গায় স্থানান্তর করার জন্য নির্দেশিকা দেওয়া হয়। সেই মতো এদিন নোনাকুড়ি ও ডিমারি বাজারের আনাজ ও মাছ দোকান নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বসানোর জন্য পদক্ষেপ করে স্থানীয় পঞ্চায়েতে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে করোনা আক্রান্ত পান ব্যবসায়ীর পরিবারের এলাকায় এ দিন ফের জীবাণুমক্ত করার কাজও করে দমকল বাহিনী।

প্রশাসনিক এত পদক্ষেপের মাঝেও এ দিন তাদের আমজনতা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তমলুক ব্লকের শ্রীরামপুরে চকগাড়ুপোতা এলাকায় একটি স্থায়ী বন্যা ত্রাণ শিবির রয়েছে। সেটিকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করার জন্য ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয়েরা কোয়রান্টিন কেন্দ্র চালুর বিরোধিতা করেন। এ দিন তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। বাঁশ, কাঠ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয় বন্যা ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার রাস্তা। শেষে প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরে বিক্ষোভ বন্ধ হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন