প্রস্তুতি: লোহার পাইপ নয়, শালবল্লা ও বাঁশ দিয়ে মেদিনীপুর কলেজ-কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে তৈরি হচ্ছে তৃণমূলের সভামঞ্চ। নিজস্ব চিত্র
সভাস্থলে শামিয়ানা তৈরি না করার কথা আগেই জানিয়েছেন দলের শীর্যনেতৃত্ব। ছাউনি থাকবে না মঞ্চের উপরও। টানা বৃষ্টিতে মাটি আরও নরম হয়ে যাওয়ায় এ বার তৃণমূলের সভামঞ্চ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে না কোনও রকম লোহালক্কর, নাট- বোল্ট। এমনকি, লোহার খুঁটি কিংবা রডও।
কাল, শনিবার মেদিনীপুরে তৃণমূলের সভা। শুক্রবার দিনভর মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির জেরে মঞ্চ তৈরির কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই মেদিনীপুরে বিজেপির পাল্টা সভার ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেদিনীপুরে যে মাঠে বিজেপি সভা করেছে, সেই মাঠেই দলের সভা হবে। সেই মতো কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে সভার আয়োজন করা হচ্ছে। তৃণমূল আগেই ঠিক করেছে, সভাস্থলে কোনও ছাউনি হবে না। এমনকি, মঞ্চেও ছাউনি হচ্ছে না।
বৃষ্টি হলে সভায় আসা লোকজন যেমন ভিজবেন, তেমনই মঞ্চে থাকা নেতারাও ভিজবেন। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায় বলেন, “২১ জুলাইয়ের সভাও তো খোলামঞ্চে হয়েছে। মেদিনীপুরের সভাও খোলামঞ্চে হবে। কোনও সমস্যা হবে না। বৃষ্টি হলে সবাই ভিজব।” মেদিনীপুরেই এই মাঠে তৃণমূলের সভা হলে সাধারণত ছাউনি করা হয়। গত বছর ৯ অগস্ট এই মাঠে সভা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও ছাউনি হয়েছিল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয়স্তরেই মঞ্চ তৈরিতে এ সব ব্যবহার না- করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতো ডেকরেটর সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, মঞ্চ তৈরিতে লোহালক্করের বদলে শালবল্লা, বাঁশ ব্যবহার করতে হবে। নির্দেশ মেনে শালবল্লা, বাঁশ দিয়েই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেছে ডেকরেটর সংস্থা। প্রধানমন্ত্রীর সভায় বিপত্তি ঘটেছে। তাই কি এই সতর্কতা? সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “মঞ্চ তৈরিতে শালবল্লা, বাঁশই ব্যবহৃত হচ্ছে। সতর্কতা হিসেবে যে সব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তাও নেওয়া হচ্ছে।”
মাঠে এখনও জল কাদা নিজস্ব চিত্র
মঞ্চ তৈরিতে কেন লোহালক্কর, নাট-বোল্ট ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত? তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় ছাউনি ভেঙে বিপত্তি হয়েছিল। দলীয় নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, ছাউনি তৈরিতে শুধু শালবল্লা কিংবা বাঁশ ব্যবহৃত হলে হয়তো ছাউনি এ ভাবে ভাঙত না। বস্তুত, ছাউনি ভাঙার পরে তদন্তে মেদিনীপুরে সভাস্থল পরিদর্শনে এসেছে একাধিক তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীদেরও মনে হয়েছে, ছাউনি তৈরিতে চূড়ান্ত গাফিলতি ছিল।
মোদীর সভা থেকে তাহলে কি শিক্ষা নিয়েছে তৃণমূল? তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, “১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় একটা বিপত্তি হয়েছে। একই মাঠে সভা। ফলে, একটু সতর্ক থাকতেই হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন মাঠের উত্তরদিকের কাঠামো ভেঙে পড়ার পরে বিকেলে দক্ষিণদিকের কাঠামোও ভেঙে পড়ে। বৃষ্টিতে মাঠের মাটি আরও নরম হয়েছে। যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”